সৌম্যজিৎ সাহা, কলকাতা: শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করতে চলেছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর ক্লারিকাল পদ এবং প্রায় সাত বছর পর গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ হবে। তার লিখিত পরীক্ষার জন্য এই প্রথম একটি বাইরের এজেন্সিকে দায়িত্ব দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে সব সংস্থা এই রকম পরীক্ষা নেয়, তাদের মধ্যে থেকে ই-টেন্ডার করে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ১১৬টি পদে শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হবে। আগামী ৬ মার্চ পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। ফর্মপূরণ এবং জমা দেওয়ার ব্যাপারটি পুরোটাই অনলাইনে করতে হবে। কোন পদের জন্য কী যোগ্যতা, তার বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
তবে কেন এমন এজেন্সিকে দায়িত্বভার দেওয়া হল? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বচ্ছতা বজায় রেখেই যাতে নিয়োগের এই পরীক্ষা হয়, সেই চেষ্টা করা হয়েছে। কোনও রকম চাপসৃষ্টি বা সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় এই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব নেয়নি। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হবেন, তাঁদের ইন্টারভিউ অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ই নেবে। উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী বলেন, বহু বছর পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বহু শিক্ষাকর্মী পদ খালি থাকায় কাজকর্মে সমস্যা হচ্ছিল। এবার স্বচ্ছতা বজায় রেখে আমরা নিয়োগ সম্পন্ন করব। ফাঁকা পদ পূরণ হলে দৈনন্দিন কাজে সুবিধা হবে। শিক্ষামহলের বক্তব্য, নিয়োগে কোনও রকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা প্রভাব যাতে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর না আসে, তার জন্যই এমন পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষের।
বিশ্ববিদ্যালয় যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে (গ্রেড ওয়ান) ৪৯ এবং নিরাপত্তারক্ষী, জুনিয়র অ্যাটেন্ড্যান্ট, ড্রাইভার, সুইপার সহ একাধিক পদে (গ্রেড টু) ৬৭ জনকে নিয়োগ করা হবে। ৪৯টির মধ্যে অংসরিক্ষত ২৭টি পদ। অন্যদিকে, ৬৭টির মধ্যে ৩৭টি অংসরক্ষিত। এই পরীক্ষা মূলত এমসিকিউ প্রশ্নের ভিত্তিতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরের পর বছর শিক্ষাকর্মী পদে থাকা ব্যক্তিরা অবসর গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সেই জায়গায় নতুন স্থায়ী কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। বরং অস্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয়। এক আধিকারিক বলেন, আগামীদিনে যাতে এই সব কর্মী স্থায়ীকরণের দাবি না করতে পারেন, তার জন্য দ্রুত স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা দরকার ছিল। তাছাড়া এই সব অস্থায়ী কর্মীর বেতন নিজস্ব তহবিল থেকেই দেওয়া হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে একটা বাড়তি আর্থিক বোঝা তৈরি হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। সরকার অনুমোদিত পদে নিয়োগ করা হলে, তার বেতন বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হবে না।
যে এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা ফর্ম জামা নেওয়া থেকে অ্যাডমিট কার্ড বিতরণ—সব কাজ করবে। পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায় হবে, সেটিও তারা ঠিক করবে। প্রসঙ্গত, শিক্ষাকর্মী নিয়োগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে সেই নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। সেইররকম পরিস্থিতি যাতে না হয়, তাই এমন এজেন্সিকে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ।