কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
অবশ্য এই বক্তব্য মানতে রাজি নন বিরোধীদলের সদস্যরা। এদিন বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ২০১০-১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন দেনার পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। গত আট বছরে বর্তমান সরকার দেনা করেছে ২ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই সরকারের দেনার পরিমাণ হল ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা। তাহলে ঋণ শোধ করা হল কোথায়? তার জবাব দিতে গিয়ে অমিত মিত্র জানান, আসল-সুদ মিলিয়ে সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা মেটানো হয়েছে। গত আর্থিক বছরেই মেটানো হয়েছে ৫৬ হাজার কোটি টাকা। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এফআরবিএম’র নিয়ম অনুযায়ী মোট জিডিপি’র তিন শতাংশ আমরা ঋণ নিতে পারি। আমাদের জিডিপি অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমরা তার অনেক কম ঋণ নিচ্ছি। ঋণ তো নিতেই হবে। কেন্দ্রীয় অনুদান কমে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে করের টাকাও কম আসছে। রাজ্য থেকে আদায় করা করের পরিমাণ থেকে রাজ্যকে আগে দেওয়া হত ৩২ শতাংশ। দীর্ঘ দাবিদাওয়া ও করের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সেই পরিমাণ ৪২ শতাংশ। তবে কাশ্মীরের জন্য ১ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে।
এদিন রাজ্যের শিল্প-অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে তরজা হয়। বেলা ১১টা থেকে বিকেল সওয়া পাঁচটা পর্যন্ত শাসক-বিরোধী মিলিয়ে ২৩ জন বিধায়ক তাতে অংশ নেন। তার জবাব দেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। শাসক দলের বিধায়করা এই বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি বিরোধী বিধায়করা রাজ্যের নানা দুর্বলতা, মদ বিক্রির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সমালোচনা করেন। আবাসন, বিদ্যালয় শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার বাজেট বরাদ্দ কমানো হয়েছে বলে সুজন চক্রবর্তী পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরেন। তিনি প্রস্তাব দিয়ে বলেন, সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত সম্পদ কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা খতিয়ে দেখার ‘বিশেষ নিরপেক্ষ কমিশন’ গড়ে তোলা হোক। তারা বিচার করে আয়করের মতো ওই সম্পদের উপরে কর বসাবে। এতে রাজ্যের নিজস্ব কর আদায় বাড়বে।
অমিত মিত্র পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, কোনও দপ্তরের বরাদ্দ কমানো হয়নি। সুজনবাবু স্টেট ডেভেলমেন্ট স্কিম বাজেট বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তার সঙ্গে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এক্সপেন্ডিচার’-এর বরাদ্দ যোগ করতে হবে। তাহলে পরিষ্কার হয়ে যাবে। আগে প্ল্যান ও নন-প্ল্যান-এই দুটি খাতে বাজেট হত। গত বছর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে স্টেট ডেভেলপমেন্ট স্কিম ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এক্সপেন্ডিচার, এই দুটি খাতে বাজেট বরাদ্দ করা হয়। সুজনবাবু বলেছেন, রাজ্যের নিজস্ব কর কমেছে, এই তথ্য সঠিক নয়। ২০১০-১১ সালে নিজস্ব কর ছিল ২১,১২৮ কোটি টাকা। ’১৯-’২০ তে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫,৮০৬ কোটি টাকা। গত আট বছরে তিন গুণ বেড়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা।