নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিধানসভা ভোটের আগে আগামী এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পুরো এক বছর আদাজল খেয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মাঠে নামার নিদান দিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটের আগের এই এক বছরের জন্য ঠাসা রাজনৈতিক কর্মসূচির খসড়াও তৈরি করছে পার্টি নেতৃত্ব। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বিধানসভা ভিত্তিক সম্মেলন শুরু করছে গেরুয়া পার্টি। শুধু তাই নয়, আদি-পুরাতনে বিভাজন না করে ‘সক্রিয় কর্মী’দের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দলের বুথ কমিটি তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার কলকাতায় দলের সমস্ত জেলা সভাপতিদের নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ম্যারাথন বৈঠকের এটাই নির্যাস। বুথ কমিটি তৈরির কথা বলা হলেও, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেননা, জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু প্রায় একমাস হতে চলল দিলীপবাবু রাজ্য কমিটি তৈরি করে উঠতে পারেননি। সূত্রের দাবি, যোগ্য নেতা হিসেবে বিকল্প নামের অভাবেই এই বিলম্ব হচ্ছে। দলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, দিলীপবাবুর নেতৃত্বে গত তিন বছরে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এই মুহূর্তে শাসক তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ এই গেরুয়া পার্টি। তাঁর কথায়, রাজ্য সভাপতি হিসেবে কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেকে নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিধানসভা-লোকসভায় প্রথমবার দাঁড়িয়ে সাফল্য পেয়েছেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষের পরবর্তী ‘মুখ’ হিসেবে এখনও সর্বজনগ্রাহ্য কোনও নেতা উঠে আসেনি। এক্ষেত্রে দলের ধারাবাহিক সাফল্য সত্ত্বেও একগুচ্ছ নেতা তুলে আনা যায়নি। যা রাজ্য কমিটি তৈরির ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে উঠছে। সূত্রের দাবি, যোগ্য নাম নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। আগামী ৩ মার্চ লোকসভা অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তার আগেই বিজেপির পূর্ণাঙ্গ রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়ে যাবে।
দলের সব জেলা সভাপতিদের কাছ থেকে স্থানীয় এলাকার পুর সমস্যা, তৃণমূল শাসিত পুর বোর্ডের ব্যর্থতা সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে। দিনভর তা কাটাছেঁড়া করেন দলের শীর্ষ নেতারা। তা বিশ্লেষণ করে আজ শনিবার দলের সব বিধায়ক-সাংসদ সহ শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ফের বৈঠকে বসছেন গেরুয়া নেতারা। সেখানেই পুরসভা ভোটের নীল নকশা তৈরি হবে। এদিনের বৈঠকে দলের এক নেতা জেলা সভাপতিদের সাফ জানান, আগামী দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যে দু’টি কর্পোরেশন এবং আটটি পুরসভার ভোট হতে পারে। তাই এখন থেকেই তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি পৃথক জনসংযোগ গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে। ‘দিদিকে বলো’র কায়দায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের সাধারণ মানুষের বাড়িতে রাত কাটানোর পরমর্শ দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে। সব মিলিয়ে পুরসভা ভোটকে ভিত্তি করে আগামী এক বছর ঠাসা কর্মসূচি নিতে চলেছে পদ্ম বাহিনী।