কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অ্যাসিড বিক্রির জন্য লাইসেন্স থাকতে হবে বিক্রেতার। দোকানদারকে অ্যাসিড বিক্রির হিসেব রাখতে হবে। ক্রেতা কিনতে এলে তাঁর পরিচয়পত্র দেখতে হবে। ক্রেতা কেন অ্যাসিড কিনছেন, সেই কারণও নথিভুক্ত রাখার কথা দোকানির। সেই সঙ্গে ক্রেতার নাম-পরিচয় লিখে তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে নেওয়ার কথা। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা করা হয় না। চলে অবাধে অ্যাসিড বিক্রি। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তাদের মতে, সাংসারিক অশান্তির জেরে এবং প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এ রাজ্যে অ্যাসিড হামলার ঘটনা বেশি ঘটে। রাজনৈতিক সংঘর্ষ বা অন্য কারণে অ্যাসিড হামলা হয় না। পুলিস যদি সাংসারিক অশান্তি বা মেয়েদের উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগগুলি আরও তৎপরতার সঙ্গে দেখে, তা হলে অ্যাসিড হামলা কমবে বলে সংগঠনের কর্মকর্তারা মনে করছেন। তবে তাঁরা এও মনে করছেন, শুধু নজরদারি বা সচেতনতার প্রচারে অ্যাসিড হামলা বন্ধ করা সম্ভব হবে না। প্রয়োজন কড়া শাস্তির।
এছাড়াও প্রশ্ন উঠেছে, দোকানে যে অ্যাসিড বিক্রি হয়, সে তো ব্যবহার হয় মূলত শৌচাগার পরিষ্কারের কাজে। আর যে অ্যাসিড নিয়ে হামলা চালানো হয়, তা মিউরিয়াটিক বা নাইট্রিক অ্যাসিড। যা সাধারণত ব্যবহার করা হয় সোনার দোকানে। ওই অ্যাসিড সাধারণ মানুষের হাতে যায় কী ভাবে?
টাকা ফেললেই যার-তার কাছে বিক্রি করা হচ্ছে অ্যাসিড। ক্রেতার নাম-পরিচয় জানার প্রয়োজন বোধ করছেন না বেশিরভাগ দোকানি। নাবালকদের হাতেও টাকার বিনিময়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে অ্যাসিডের বোতল। মুদির দোকান, হার্ডওয়্যারের দোকান— সর্বত্রই কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে অ্যাসিড বিক্রি হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
গত বছরের শেষের দিকে ২০১৮’র যে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট পেশ হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গে অ্যাসিড আক্রমণের ৫০টি ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত মোট ৫৩ জন।
এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের পরেই আছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। ২০১৮ সালে সেখানে ৪০টি অ্যাসিড-হামলার ঘটনা ঘটেছে। অ্যাসিড আক্রমণের চেষ্টার সংখ্যাতেও শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। এক বছরে বঙ্গে অ্যাসিড-হামলার চেষ্টার ১২টি ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, অতীতে দেশ জুড়ে অবাধে অ্যাসিড বিক্রি বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ তরুণী লক্ষ্মী অগ্রবাল। ওই বিষয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও করেছেন। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তাদের কথায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় খাতায় কলমেই রয়ে গিয়েছে। রাজ্যের পুলিস-প্রশাসন তো বটেই, জেলা পুলিসের কাছেও অ্যাসিড বিক্রির কোনও তথ্য থাকে না।