বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: আদর্শ নিয়মনীতি মেনে করোনার প্রস্তুতির জন্য মোদি সরকারের অফিসাররা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যদপ্তরের। বুধবার করোনা প্রস্তুতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তাদের ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে বৈঠক ছিল। সেখানেই ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম-এর কর্তারা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অফিসাররা রাজ্যের পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রাজ্য যেভাবে করোনা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পরই আইডি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গে এই ধরনের রোগীদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং প্রয়াোজনীয় পরিকাঠামো প্রস্তুত রেখেছে, যেভাবে নেপাল ও বাংলা সীমানার তিন জায়গায় নজরদারি এবং ২৪ ঘন্টার জন্য প্যারামেডিক্যাল টিম মোতায়েন রাখা হয়েছে, খোলাখুলি তার প্রশংসা করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। করোনা নিয়ে আর কী কী পদক্ষেপ জরুরি, স্বাস্থ্যমন্ত্রক কর্তাদের কাছে তা জানতে চান মমতার অফিসাররা। কেন্দ্রীয় কর্তারা জানান, এখনও পর্যন্ত যা হয়েছে যথেষ্ট। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। এদিকে করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষের যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে দুটি ২৪ ঘন্টা টোল ফ্রি নম্বর চালু করল রাজ্য। নম্বর দুটি হল ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ এবং ০৩৩২৩৪১২৬০। যদিও করোনা প্রস্তুতিতে এখানেই থেমে থাকছে না স্বাস্থ্যভবন। দপ্তরের এক অন্যতম শীর্ষকর্তা জানান, এরপর সমাজের তিনটি স্তরে করোনা নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হবে। এক, সাধারণ মানুষ, দুই, আপামর চিকিৎসক সমাজ এবং তিন, সমস্ত ধরনের স্বাস্থ্যকর্মী।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ভিডিও কনফারেন্সিং-এ আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জায়গা নেই। সবসময় সবদিক থেকে সতর্ক আছি। বাইপাসের ধারের হাসপাতালে মৃত থাই তরুণী এবং বেলেঘাটা আইডি’র ওই চীনা তরুণীর থ্রোট সোয়াব পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। তবে যেটুকু জানা গিয়েছে, ওদের কারও উপসর্গই করোনার আদর্শ উপসর্গের সঙ্গে মেলে না। রিপোর্টও হয়ত নেগেটিভই আসবে। তাও সাবধানের মার নেই।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আঞ্চলিক অধিকর্তা ডাঃ সত্যজিৎ সেন, ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর শীর্ষ আধিকারিকরা এবং দিল্লি থেকে আসা স্বাস্থ্যকর্তারা বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে করোনা প্রস্তুতি পরিদর্শন করে আসেন। ইতিমধ্যেই করোনা মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্যদপ্তর বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করেছে। তাতে দুই স্বাস্থ্য অধিকর্তা ছাড়াও আছেন পিজি হাসপাতালের মেডিসিনের প্রধান ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ বিভূতি সাহা, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য-বিপদ নজরদারি সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেলেন্স প্রোগ্রামের অন্যতম শীর্ষকর্তা ডাঃ দীপঙ্কর মাজি সহ কয়েকজন। মঙ্গলবার সেই টিম বৈঠকে বসে পরবর্তী পরিকল্পনাও স্থির করেছে।