পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জলজীবন মিশনের অধীনে ‘হর ঘর জল’ নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই প্রকল্পে পরিকাঠামো তৈরি করতে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে মোট খরচের ১০ শতাংশ টাকা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের একটি খসড়া পাঠানো হয়েছে নবান্নে। সেই খসড়ায় ওই শর্তের ব্যাপারেই আপত্তি তুলেছেন নবান্নের শীর্ষকতারা। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলকর বসাননি। টাকা দিয়ে জল কেনার তিনি চরম বিপক্ষে। গ্রামে পাইপলাইন বসানো সহ পরিকাঠামো তৈরিতে গ্রামবাসীদের টাকা দিতে হবে, এই শর্ত মানা সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে সকলের বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, তাও অযৌক্তিক বলে মনে করে রাজ্য সরকার।
গোটা রাজ্যে ৫৯ শতাংশ এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। তবে গ্রামীণ এলাকায় দু’কোটি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে এখন মাত্র ১২ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের পাইপলাইনের সংযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, মাথাপিছু প্রতিদিন ৫৫ লিটার করে জল দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের জন্য গোটা দেশে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ এক থেকে দেড় হাজার কোটি। জলজীবন মিশন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার দেবে ৫০ শতাংশ টাকা। আর ম্যাচিং গ্র্যান্ট হিসেবে রাজ্য সরকারকে দিতে হবে বাকি ৫০ শতাংশ টাকা। ফলে গোটাটাই কেন্দ্রের কর্মসূচি বলা যাবে না বলে নবান্নের এক শীর্ষকর্তা জানান।
এই প্রকল্পের অন্যতম শর্ত হল, গ্রাম পঞ্চায়েতকে প্রতিটি গ্রামে ইউজার গ্রুপ অর্থাৎ ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি কমিটি বা ‘পানি সমিতি’ করতে হবে। বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জল ব্যবহারের জন্য ভিলেজ অ্যাকশন প্ল্যান, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকশন প্ল্যান এবং স্টেট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এই প্ল্যানের মাধ্যমে গ্রামে পানীয় জলের উৎস কী, তা চিহ্নিত করা হবে। সেই জলকে কী করে সংরক্ষণ করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করে পানীয় জলের উপযুক্ত করে তুলতে হবে।
বাংলায় শহর এলাকায় জল দেয় পুরসভা ও পুর দপ্তর। আর গ্রামীণ এলাকায় জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। এই দপ্তরের অধীনে ইতিমধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েকশো প্রকল্প চলছে। রাজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতি এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। সেই লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু তা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।