কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
২০১৮ সালে মন্দারমণিতে পল্লিমঙ্গল সেবা সমিতি নামে একটি সংস্থা খোলা হয়। তারা বলে, বিভিন্ন ব্যক্তিকে ঝণ পেতে সাহায্য করবে এই সংস্থা। পাশাপাশি সেখানে টাকাও জমা রাখা যাবে। এরজন্য ভালো সুদ দেওয়া হবে। তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে অনেকেই এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঋণ পেতে ইচ্ছুক লোকজনের সঙ্গে সংস্থার কর্ণধারদের মোবাইলে এ বিষয়ে দীর্ঘ কথাও বলেন। বলা হয়, ঋণ নিতে হলে প্রথমে তাদের সংস্থার সদস্য হতে হবে। অনেকেই সেই মতো সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এরপর ঋণ দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন অজুহাতে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু কেউই ঋণ পাননি। সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতারিতরা মন্দারমণি কোস্টাল থানায় অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে প্রতারণা এবং জালিয়াতির মামলা রুজু হয়। পরে তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে।
সিআইডি তদন্তে নেমে চার অভিযুক্তের নাম পায়। জোগাড় করা হয় ঋণ পেতে আগ্রহীদের সঙ্গে সংস্থার কর্ণধারদের মোবাইলে কথোপকথনের রেকর্ড। সিসিটিভির ফুটেজও নেওয়া হয়। প্রতারণার প্রমাণ হিসেবে খুব বেশি কাগজপত্র হাতে পায়নি তদন্তকারী সংস্থা। তাই প্রযুক্তিগত নথিই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। আদালত দুই অভিযুক্তের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেয়। মোবাইলে অভিযুক্তদের যে কণ্ঠস্বর পাওয়া গিয়েছে, তা যাচাই করার জন্য হেফাজতে থাকা দুই অভিযুক্তের কথার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তা ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফ করার সিদ্ধান্ত নেন আধিকারিকরা। সিআইডি ওই নমুনা চণ্ডীগড়ে পাঠায়। তা বিশ্লেষণ করেন বিজ্ঞানী ডি পি গাঙ্গোয়ার। রিপোর্টে তিনি জানিয়ে দেন, দু’জনের কণ্ঠস্বর হুবহু মিলে গিয়েছে। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা পড়ে।
ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফের মাধ্যমে অপরাধের কিনারা রাজ্য পুলিসে এর আগে হয়নি বলে দাবি তদন্তকারী অফিসারদের। বিশেষ সফটওয়্যারে ফেলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপরই গোটা মামলার ভাগ্য ঝুলে থাকে। সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়েস স্পেকট্রোগ্রাফ পরীক্ষার গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। চণ্ডীগড় সিএফএসএলেই একমাত্র তা করা হয়।
আদালত খামবদ্ধ ওই রিপোর্ট দেখার পর ওই বিজ্ঞানীকে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠায়। সেইমতো শুক্রবার তিনি কাঁথি আদালতে যান। সিআইডির তরফে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চণ্ডীগড়ের বিজ্ঞানীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতকে তিনি বলেছেন, এই পরীক্ষা তিনিই করেছেন। কণ্ঠস্বরের নমুনাও মিলে গিয়েছে। এর ফলে তাঁদের কেস আরও শক্তপোক্ত হল।