পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
২০১৯ সালের জুলাই মাসের গোড়ার দিকের ঘটনা। আচমকাই একদিন সোর্স মারফত হাইল্যান্ড পার্কের আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্রের কথা কানে আসে লালবাজারের। গোয়েন্দা বিভাগের এক শীর্ষকর্তার নির্দেশে অত্যন্ত গোপনে খোঁজখবর শুরু হয়। প্রাথমিক অবস্থায়, গোয়েন্দারা এই চক্রের কয়েকজন সদস্যের উপর গোপনে নজরদারি চালাতে শুরু করেন। প্রায় মাস তিন-চার ধরে টানা নজরদারি চালিয়ে শহরের বুকে এই কিডনি পাচার চক্রের কুশীলবদের নাম-পরিচয় হাতে পান তাঁরা। জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অন্তত আট থেকে দশজনের একটি চক্র সক্রিয়। গোয়েন্দাদের হাতে কিছু তথ্য-প্রমাণও উঠে আসে।
কলকাতায় বসে কীভাবে কাজ করছে আন্তর্জাতিক চক্র? প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এই চক্রের জাল কলকাতা থেকে নেপাল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। চক্রের মূল এজেন্টরা নেপালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মূলত, নেপালের গরিব ও বেকার যুবকদের ভারতে চাকরির টোপ দিয়ে ইন্দো-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতায় আনা হচ্ছে। অভিযোগ, এরপর ‘ব্ল্যাকমেল’ করে ওই যুবকদের কাছ থেকে জোর করে কিডনি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনে নেপালের সচিত্র পরিচয়পত্র সহ অন্য নথিও জাল করছে এই চক্রের সদস্যরা।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে, কলকাতা পুলিসের নাকের ডগায় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এমন কিডনি পাচার চক্রের রমরমা সত্ত্বেও নিষ্ক্রিয় কেন লালবাজার? পুলিসের দাবি, ১৯৯৪ সালের ট্রান্সপ্লান্টেশন অব হিউম্যান অর্গান আইনে পুলিস কার্যত অসহায়। এই আইনে পুলিসকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরুর ক্ষমতাই দেওয়া হয়নি। এই নয়া আইনে, প্রতারিত কেউ পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তখন পুলিস মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারবে। আবার, নোডাল এজেন্সি অর্থাৎ স্বাস্থ্য দপ্তর পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিস এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারবে।
হাইল্যান্ড পার্কের এই আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্র নিয়ে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইন অনুসারে এই চক্রের বিরুদ্ধে যারা ব্যবস্থা নিতে পারে, ইতিমধ্যেই আমরা বিষয়টি তাদের জানিয়ে দিয়েছি।
রাজ্যের কিডনি বোর্ডের সদস্য তথা প্রতিস্থাপন বিষয়ক নোডাল অফিসার তমালকান্তি ঘোষকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, পুলিস এমন অভিযোগ পাঠালে আমরা বরাবর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখি। এবারও দেখা হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) দেবাশিস ভট্টাচার্য এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।