বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোককান্তি সান্যাল বলেন, মেছো বিড়াল বা ফিশিং ক্যাট এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রাণী। তাই এটাকে রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য। কারণ জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে এই প্রাণীটির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এর আগে যখন ভাঙড়ে একাধিক মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছিল, তখন তাঁরা গ্রামে গিয়ে সচেতনতা প্রচার করেছিলেন। এবারও কোন্নগরে গিয়ে একইভাবে প্রচার চালানো হবে। খুব শীঘ্রই তাঁরা কোন্নগরের কানাইপুরে গিয়ে এই সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করবেন বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, পর্ষদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিপন্ন এই প্রাণীকে রক্ষা করার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগিতায় একটি সার্বিক সমীক্ষা চালানো হচ্ছে গোটা রাজ্যেই।
সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গৌতমকুমার সাহা বলেন, যত সমস্যা ‘বাঘরোল’ নামটাকে ঘিরেই। নামের সঙ্গে ‘বাঘ’ কথাটি যুক্ত থাকাতেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। অথচ রাজ্যব্যাপী এই প্রাণীটির নাম বাংলায় মেছো বিড়াল এবং ইংরেজিতে ফিশিং ক্যাট হিসেবেই নথিবদ্ধ। প্রাণীটির চোখের সামঞ্জস্যের কারণে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এলাকায় এটিকে ‘বাঘরোল’ বলেও ডাকা হয়। কিন্তু, এই প্রাণীটি বাঘের মতো একেবারেই হিংস্র নয়। আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো বিড়ালের মতোই এর স্বভাব-চরিত্র। শুধুমাত্র আকৃতি বড় হওয়ার কারণে এরা একেবারে লোকের মাঝে নয়, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে। মানুষ জঙ্গল কেটে যত কংক্রিটের জাল বাড়াচ্ছে, তত এরা বাইরে বেরিয়ে আসছে। আর মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাত ঘটছে।
তিনি আরও জানান, সমীক্ষা চলাকালীনই তাঁরা বারবার বলেছেন এর ‘বাঘরোল’ নাম ভুলে একে সবাই মেছো বিড়াল বলে চিনুক। এবার সেই প্রচারেই আরও জোর দেওয়া হবে। তাঁরা ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় স্কুল-কলেজে বিভিন্ন শিবির করে প্রাণীটি সম্পর্কে পড়ুয়াদের সচেতন করা হয়েছে। তারা যাতে গ্রামে বা শহরে নিজেদের এলাকায় গিয়ে এই প্রচার চালায়, সেবিষয়েও তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এবিষয়ে আরও সচেতনতা প্রচার করা হবে। কোন্নগরেও তাঁরা যাবেন। জলাশয় ভিত্তিক যে সমস্ত এলাকাকে ঘিরে মানুষের বসতি গড়ে উঠেছে, সেখানেই এই প্রাণীটি দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু, সেগুলি অত্যন্ত নিরীহ। তাই তাদের দেখে আতঙ্কিত হবেন না, এই মর্মে তাঁরা মানুষকে বোঝাতে চান।