নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কিছুদিনের মধ্যেই শিলিগুড়ি থেকে নেপালের কাঠমাণ্ডু পর্যন্ত সরকারি বাস চলাচল শুরু হবে। বুধবার কসবার পরিবহণ ভবনে এক অনুষ্ঠানে এমনটাই ঘোষণা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের এই অনুষ্ঠান থেকে একগুচ্ছ ইলেকট্রিক বাসের যাত্রার সূচনা, বইমেলার জন্য পরিবহণ-পুস্তিকা প্রকাশ, ওভারলোডিং যানবাহন ধরতে নয়া যন্ত্রের উদ্বোধন, ধর্মঘটে যানবাহনের ক্ষতিতে বিমার চেক প্রদান, দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিজনদের ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ একগুচ্ছ কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠান থেকেই দু’টি ইন্টার-স্টেট রুটে ভলভো বাস চালানোর জন্য পারমিট প্রদান করা হয়। শুভেন্দুবাবু বলেন, সাঁতরাগাছি-পাটনা এবং কাঁথি-পুরী রুটে বাস চলাচলের জন্য পারমিট দেওয়া হল। দুই রুটে বহু যাত্রী পরিষেবা নিতে পারবেন। আগামী দিনে শিলিগুড়ি থেকে কাঠমাণ্ডু পর্যন্ত বাস চালানো হবে। শিলিগুড়ি থেকে বাস চালানোর দায়িত্বে থাকবে সরকারি পরিবহণ নিগম এনবিএসটিসি। বাসে আট ঘণ্টার মতো সময় লাগার কথা। যাত্রাপথে দু’টি জায়গায় হল্ট দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকারি পরিবহণের উপরে যাত্রীদের আস্থা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। পরিষেবার মান বাড়ায় বাড়ছে যাত্রীসংখ্যাও। এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাসে যেখানে দৈনিক এক থেকে দেড় লক্ষ যাত্রী পরিষেবা নিতেন, সেখানে বর্তমানে ছয় থেকে সাত লক্ষ যাত্রী পরিষেবা নিচ্ছেন। সরকারি ইলেকট্রিক বাসও ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে। সেই সূত্রেই আরও ১০টি ইলেকট্রিক বাসের পরিষেবার সূচনা হল। সেগুলি তিনটি রুটে চলবে। নিগমকর্তারা জানিয়েছেন, এসি ১২ এবং এসি ২৩ এ রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ১০টির মধ্যে অর্ধেক বাস যোগ করা হয়েছে এই দুই রুটে। বাকি পাঁচটি বাস চলবে হাওড়া ঩স্টেশন থেকে করুণাময়ী রুটে। এই রুটটি নতুন। এই রুটের বাসের নম্বর হবে এসি ৫৯ এ। শুভেন্দুবাবু বলেন, আরও ৫০টি ইলেকট্রিক বাস বৃহত্তর কলকাতায় নামানো হবে। অর্থদপ্তর তার অনুমোদন দিয়েছে। আগামী দিনে অর্থদপ্তর আরও বেশি ইলেকট্রিক বাসের অনুমোদন দিলে, তা নামানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
এদিন কলকাতা বইমেলার জন্য সরকারি পরিবহণের যাবতীয় আয়োজন নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন শুভেন্দুবাবু। বইমেলাকে ঘিরে সরকারি পরিবহণ নিগম এসবিএসটিসি’র বিশেষ প্যাকেজ তৈরির কথা আগেই জানা গিয়েছিল। সেই প্যাকেজের মধ্যেই বাসের ভাড়া, টিফিন ও দুপুরের খাবারের দাম ধরা রয়েছে। অন্যান্য বাসের সূচির সঙ্গে সেই প্যাকেজগুলিও স্থান পেয়েছে পুস্তিকায়। নির্দিষ্ট দিনে হলদিয়া, মহিষাদল, তমলুক, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, খড়্গপুর, সিউড়ি, বোলপুর, আসানসোল, দুর্গাপুর এবং আরামবাগ থেকে বইমেলাকে ঘিরে ‘প্যাকেজ ট্যুর’-এর বাস ছাড়বে। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম বইমেলার জন্য শিয়ালদহ, কামালগাজি, টালিগঞ্জ, ডানলপ এবং উল্টোডাঙা থেকে শাটল পরিষেবা দেবে। নিয়মিত বহু রুট ছাড়াও বইমেলার জন্য অজস্র স্পেশাল বাস চালাবে তারা। শহর-শহরতলির নানা জায়গা থেকে সেসব বাস ছাড়বে।
এদিন শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, বইমেলার জন্য ৪০০টি বাস চলবে। সেসব বাস পথদিশা অ্যাপে দেখা যাবে। মেলাস্থলে পরিবহণের একটি স্টলও করা হবে। সেখানেও বইপ্রেমীরা বাসের খোঁজ করতে পারেন। এদিন কসবার পরিবহণ ভবনে উপস্থিত ছিলেন বইমেলার আয়োজক সংস্থা ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড’-এর কর্তারা। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক শুধাংশু শেখর দে বলেন, পরিবহণ দপ্তর এবারও বাসের খুব ভালো ব্যবস্থা করছে। বইপ্রেমীদের মেলায় আসতে কোনও সমস্যা হবে না।