বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে প্রয়াত পালাকার যাত্রা শিল্পীদের কথা। তাঁর মধ্যে আছেন মতিলাল রায়, নীলকণ্ঠ মুখোপাধ্যায়, মুকুন্দ দাস, ভোলানাথ কাব্যশাস্ত্রী, ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ, সৌরীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায়, ব্রজেন্দ্রকুমার দে, গোবিন্দ অধিকারী, পঙ্কজভূষণ কবিরত্ন, নন্দগোপাল রায়চৌধুরী, বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, কেশবচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, মদনমোহন চট্টোপাধ্যায়, গৌর ভড়, প্রসাদকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, পাঁচকড়ি চট্টোপাধ্যায়, রামদুর্লভ কাব্যবিশারদ বাচস্পতি, হরিপদ চট্টোপাধ্যায়, অহিভূষণ ভট্টাচার্য, শশাঙ্কশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, জীতেন্দ্রনাথ বসাক, আনন্দময় বন্দ্যোপাধ্যায়, কানাই নাথ, দেবেন নাথ, সত্যপ্রকাশ দত্ত, ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়, শম্ভু বাগ, শৈলেন গুহনিয়োগী, কমলেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, নির্মল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। অ্যাকাডেমি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রদর্শনীতে তথ্য সংকলনে সহযোগিতা করেছেন প্রবীণ নট ও নাট্যকার তথা রাজ্য যাত্রা অ্যাকাডেমির সদস্য সুনীল চৌধুরী। এই কাজে সহযোগিতা করেছেন ডঃ প্রভাতকুমার দাস ও ডঃ তরুণকুমার দে। এই প্রদর্শনীর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পালাগানের মালাকার’। প্রবীণ যাত্রা শিল্পী রুমা দাশগুপ্ত বলেন, যাঁরা যাত্রা জগৎ নিয়ে গবেষেণা করেন, এই প্রদর্শনী তাঁদের কাজে লাগবে। দুই তরুণ যাত্রাশিল্পী সিদ্ধার্থ গুহ ও কোয়েল ভট্টাচার্যেক কথায়, একইসঙ্গে যাত্রা ও প্রদর্শনী দেখার সুযোগ সব সময় হয় না। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন প্রদর্শনী দেখতে। দেখে বেশ ভালো লাগছে। আমরা আশা রাখি, আগামী দিনে এমন প্রদর্শনী আরও হবে। এদিকে, অ্যাকাডেমির আরেক সদস্য কনক ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ও যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের উদ্যোগে এই কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
এই প্রদর্শনী থেকে যাত্রা জগতের অনেক না জানা কাহিনী প্রকাশ্যে এসেছে। অন্ন, বস্ত্র, অর্থ, শিক্ষার প্রতিকূলতাকে জয় করে যাত্রা জগতে স্থায়ী আসন আদায় করে নিয়েছেন ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়। এই মহান পালাকার জীবনে যত পালা লিখেছেন, তার শতকরা নব্বই শতাংশই ব্যবসায়িক সাফল্য পেয়েছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য পালা হল ‘মা মাটি মানুষ’, ‘অচল পয়সা’, নাচ মহল প্রভৃতি। আবার শিল্পী গোবিন্দ অধিকারীর যাত্রা দেখে স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ কিশোর বয়সে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এই শিল্পীর উল্লেখযোগ্য পালাগুলির মধ্যে রয়েছে ‘শুক সারি কথা’, ‘চূড়া নুপুরের দ্বন্দ্ব’ প্রভৃতি। পাঁচকড়ি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের যশস্বী পালাকার। তাঁর পালাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘আধে রাখী বন্ধন’, ‘টিপু সুলতান’ ইত্যাদি। এরকম অজস্ব নট ও নাট্যকারের জীবন কথা ফুটে উঠেছে এই প্রদর্শনীতে। সামাজিক-রাজনৈতিক পালায় যাঁর নাম উল্লেখ না করলেই নয়, সেই মঞ্চ কাঁপানো শিল্পী উৎপল দত্তের বিভিন্ন দিকও উঠে এসেছে প্রদর্শনীতে। তাঁর করা ‘সন্ন্যাসীর তরবারি’, ‘ঝড়’, ‘রাইফেল’, ‘জালিয়ানওয়ালাবাগ’ প্রভৃতি যাত্রা উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি বাড়তি পাওনা হল রাজ্য যাত্রা অ্যাকাডেমির বিভিন্ন দুষ্পাপ্য পত্র পত্রিকা। যা এখানকার স্টল থেকে পাওয়া যাচ্ছে।