রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
গত শুক্র ও শনিবার পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক স্টেশন, ট্রেন, অফিসে ভাঙচুর করা, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর বিভাগেই ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৭৯ টাকা। তার মধ্যে বিভিন্ন লেভেল ক্রসিংয়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। দু’টি ইঞ্জিন ও একাধিক রেক মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ৯ কোটি ৯২ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৭৪ টাকা। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া সহ একাধিক স্টেশনেও।
অন্যদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত বাসের আর্থিক দায়ভার কতটা হতে পারে, তার হিসেব কষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে। অধিকাংশ বাসেই বিমা করানো থাকায়, আর্থিক ভার অনেকটাই লাঘব হবে বলে বেসরকারি মালিক সংগঠন ও পরিবহণ দপ্তর সূত্রের খবর। তবে বেসরকারি মালিকদের দাবি, যেসব বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বা বেশি ক্ষতি হয়েছে, বিমার টাকা পেয়ে সেসব বাস নতুন করে রুটে ফেরাতে অন্তত ছ’মাস সময় লাগবে। এই সময়ে একদিকে যেমন যাত্রীরা সেইসব বাসের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন, তেমনই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মালিকরাও।
সরকারি সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে তাদের মোট চারটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসগুলির সামনের বা জানালার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এসবিএসটিসি সূত্রের খবর, তাদের মোট ১৬টি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে আটটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাকি বাসগুলিতে ইট ছুঁড়ে ক্ষতি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আর্থিক অঙ্কে যে হিসেব কষা হয়েছে, তাতে ক্ষতির পরিমাণ আড়াই কোটি ছাড়াতে পারে বলে মনে করছেন কর্তারা। তেমনই এনবিএসটিসি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, গত কয়েকদিনে তাদের মোট ১১টি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল তিনটি বাসে। নিগমের এক কর্তা বলেন, আর্থিক অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা যাবে না। আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত বাসগুলিকে পরীক্ষা করা হবে।
গত কয়েকদিনে যেভাবে বেসরকারি বাসে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তা নিয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ মালিক সংগঠনগুলির নেতারা। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখনও পর্যন্ত যা খবর এসেছে, তাতে গোটা রাজ্যে আমাদের সংগঠনের বেশি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যাটি কমবেশি ৫০। তার মধ্যে ১৫টি বাসকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, যা খবর এসেছে, তাতে গোটা রাজ্যে সব মিলিয়ে ৫৫ থেকে ৬০টি বেসরকারি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি বাসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত সাতটি পরিবার যুক্ত থাকে। গত কয়েকদিনে যা ঘটল, তার দায় কে নেবে? যেসব বাস ক্ষতিগ্রস্ত হল, তার সঙ্গে যুক্ত থাকা পরিবারগুলি এবার খাবে কী? আমাদের বক্তব্য, বিমার টাকা যাতে দ্রুত পাওয়া যায়, তা পুলিস-প্রশাসনকে দেখতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে সরকার দাঁড়াক, এটা আমরা চাই। ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পল্লব মজুমদার বলেন, বিমার টাকা পেয়ে পুড়িয়ে দেওয়া বা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাসগুলিকে ফের রাস্তায় নামাতে অন্তত ছ’মাস লাগবে। এই ছ’মাসে যাত্রীরা যেমন সংশ্লিষ্ট বাসের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন, তেমনই বাসগুলি থেকে মালিকদেরও কোনও আয় হবে না। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা প্রশাসনকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখতে হবে।