কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মামলাকারী অলোককুমার চট্টোপাধ্যায় হাওড়া আদালতের নির্দেশমাফিক ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকা জমা করেন। অভিযোগমুক্ত হলে সেই অর্থ তাঁকে বাতিল হয়ে যাওয়া নোটে ফেরত দেওয়া হয়। এই অভিযোগ সূত্রে হাইকোর্ট হাওড়ার জেলা বিচারকের রিপোর্ট তলব করে। তা পেশ হয়। হাইকোর্টের প্রশ্নের জবাবে রিপোর্টে বলা হয়, ‘কিছু সমস্যার’ কারণে ব্যাঙ্কে ওই টাকা জমা করা যায়নি। হাইকোর্টের আরেকটি প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করে পাওনা অর্থ আবেদনকারীকে তাঁর আইনজীবীর উপস্থিতিতে ফেরত দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ীই ওইসব পুরনো নোট তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, হাইকোর্টকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া জানায়, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী নোটবন্দির পরে পুরনো টাকার বিনিময়ে নতুন টাকা তিনটি অবস্থায় ফেরত দেওয়া হয়। এক) যদি সেই টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে থাকে, দুই) কোনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা যদি সেই টাকা উদ্ধার করে থাকে, তিন) যদি কোনও আদালতে তা ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগে জমা হয়ে থাকে। অলোকবাবু আদালতে ওই টাকা জমা করেছিলেন ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল।
এই প্রেক্ষাপটে আদালত বলেছিল, ব্যাঙ্কে ওই টাকা সময়মতো জমা না পড়ার দায় আবেদনকারীর নয়। তাই চার সপ্তাহের মধ্যে ডিমান্ড ড্রাফ্টে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে। একইসঙ্গে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরও হাইকোর্ট চেয়েছিল। নগদ হিসেবে আদালতে যে টাকা জমা হয়েছিল, তা কেন পরবর্তী দুই বছরের মধ্যেও ব্যাঙ্কে জমা পড়েনি? হাওড়ার জাজশিপের রেজিস্ট্রিতে যে অর্থ জমা হয়, তা কতদিনের মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা হয়? ওই আদালতে হওয়া অডিটে কেন এই বিষয়টি ধরা পড়ল না? কীভাবে ওই আদালতের ক্যাশিয়ার বাতিল হওয়া টাকা নিজের কাছে রেখে দিলেন? আরও কত এমন বাতিল নোট ওই ক্যাশিয়ারের কাছে রয়েছে?
এই নির্দেশের যথাযথ উত্তর না মেলার অভিযোগে মামলাকারীর আইনজীবী সুশান্ত পাল আদালত অবমাননার মামলা করেন। সেই সূত্রে অ্যাডভোকেট জেনারেল সম্প্রতি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকে জানান, নিঃসন্দেহে মামলাকারীকে তাঁর অর্থ ফেরত দেওয়ার দায়বদ্ধতা রয়েছে। তবে হাওড়া আদালত সহ বহু জেলা আদালতেই এমন বাস্তব সমস্যা রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বাতিল নোট জমা করা হয়নি। কিন্তু, আদালত বলেছে, সেই সমস্যা দেখছে হাইকোর্ট প্রশাসন এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। কিন্তু, এখানে বাস্তব সত্য হল, মামলাকারীর টাকা ফেরত দিতে দেরি হচ্ছে। এর জন্য তাঁকে কোনওভাবেই দায়ী করা যায় না। তাই যেদিন থেকে তিনি অভিযোগমুক্ত, সেদিন থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার সময়কালের জন্য প্রাপ্য টাকার উপর তাঁর ৯ শতাংশ হারে সুদ প্রাপ্য। যা পরে বিবেচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।