পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সম্প্রতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিট বা ন্যাশনাল এন্ট্রান্স কাম এলিজিবিলিটি টেস্ট-এর ‘প্রসপেক্টাস’ প্রকাশ করেছে পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এ বছর ইংরেজি ছাড়া আরও ছ’টি ভাষায় এই প্রসপেক্টাস প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে অসমীয়া, কন্নড়, মারাঠি, ওড়িয়া, তামিল, গুজরাতিতে ইনফরমেশন বুলেটিন বা প্রসপেক্টাস প্রকাশ করা হলেও বাংলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবিকা, নিট প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা সমস্ত মহলেই।
গোটা বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং দপ্তরের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সচিব বিবেক কুমার দু’জনেই জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বাংলা ভাষায় নিট পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অন্যতম সংগঠন টার্গেট এমবিবিএস ফোরাম ফর বেঙ্গল-এর সহকারী সম্পাদক রঞ্জন রায়ের দাবি, বাংলা থেকে প্রায় ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী নিট পরীক্ষায় বসেন। অথচ বাংলায় ইনফরমেশন বুলেটিন বা প্রসপেক্টাস প্রকাশ করার তাগিদ অনুভব করল না এনটিএ। আশ্চর্য! রাজ্যের প্রত্যন্ত প্রান্তে কত মেধাবী ছেলেমেয়ে বাংলায় এই পরীক্ষায় বসে ডাক্তারি পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ধরনের পক্ষপাতিত্বমূলক মনোভাবের আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি। নিট প্রস্তুতির সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত শিক্ষক ডাঃ এ কে মাইতি বলেন, নিটের গোড়া থেকেই প্রসপেক্টাস বা ইনফরমেশন বুলেটিন হিন্দি ও ইংরেজিতে প্রকাশ করে আসা হচ্ছে। এ বছর আরও বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষাকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে তাতে বাংলা নেই। সত্যিই অবাক হয়েছি।
প্রসঙ্গত, নিট পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় জরুরি জিজ্ঞাসার উত্তর রয়েছে এই ১৩২ পাতার ইনফরমেশন বুলেটিনে। কবে পরীক্ষা, কতক্ষণের পরীক্ষা, পরীক্ষার ফিজ কত, কবে ফর্ম ফিল আপ, কবে তা শেষ, কবে ফলাফল, পাঠ্যক্রম, কীভাবে প্রতিটি ধাপে ফর্ম ফিপ করতে হবে, কী কী পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়া যাবে, কী নয়, কোন কোন বিষয় এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে দণ্ডনীয় বলে মনে করা হবে সহ অজস্র কৌতূহলের উত্তর দেওয়া হয়েছে এই বিস্তৃত বিবরণের ইনফরমেশন বুলেটিনে। ফলে একজন নিট পরীক্ষার্থীর কাছে এই বুলেটিন বা প্রসপেক্টাস পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে শুরু করে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা থেকে পরীক্ষার দিন কী করণীয় সহ অজস্র তথ্য দেওয়া রয়েছে। নিঃসন্দেহে যে ভাষায় পরীক্ষা দেবেন ছাত্রছাত্রীরা, তাতে এই ইনফরমেশন বুলেটিন প্রকাশিত হলে, তাদের বোঝার সুবিধা, প্রস্তুতিতে সুবিধা, এমনকী জীবনের প্রথম জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রাধিকার স্বাভাবিকভাবেই পাবেন তাঁরা। আর তাতেই ভাষা বৈষম্যের জন্য বেজায় চটেছেন অনেকে।
আবেগ বাদ দিয়ে পরিসংখ্যান এবং যুক্তিকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাতেও দেখা যাবে ইংরেজি, হিন্দি ছাড়া যদি সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থীর হিসেব অনুযায়ী আঞ্চলিক ভাষা বাছতে হয়, তাতেও প্রথম পাঁচটি আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে অবধারিতভাবে জায়গা করে নেওয়ার কথা বাংলার। ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গুজরাতের পরই বাংলা থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থী নিটের ফর্ম পূরণ করেন। ২০১৯ সালে হিন্দি, ইংরেজি বাদ দিলে বাংলাতে নিট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দেশে দ্বিতীয়, গুজরাতের পরই।