রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
রাজভবনে আসা ইস্তক জগদীপ ধনকার প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি কেন্দ্রের শাসক বিজেপির হয়ে কাজ করছেন বলেও দাবি করেছে তৃণমূল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যপাল বাংলায় সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করেন। উল্লেখ্য, ওই রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও গভীর রাতে বিজেপি সরকার গড়ার সুযোগ পায়। এই বেনজির ঘটনার নেপথ্যে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল অতিসক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। একদিনের মধ্যেই তাঁর সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। দেবেন্দ্র ফড়নবীশ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। শিবসেনা-এনসিপি জোট সরকার গঠিত হয়। সপ্তাহখানেক আগের সেই নাটকীয় ঘটনা গোটা দেশেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। ফড়নবীশ দ্বিতীয় দফায় মুখ্যমন্ত্রী হতে না হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁকে অভিনন্দিত করেছিলেন। স্বভাবতই, রাজ্যপালের ভূমিকা ও কেন্দ্রের শাসকদলের যৌথ তৎপরতা নিয়ে সব মহলে বিতর্ক দেখা দেয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেও বাংলার রাজ্যপালের দলতান্ত্রিক ভূমিকারই ইঙ্গিত মিলেছে। মহারাষ্ট্র মডেলে এখানে রাজ্যপালের স্বেচ্ছাচার চলবে না— বস্তুত চ্যালেঞ্জের সুর মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তাঁর মতে, এরাজ্যেও সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন রাজ্যপাল। রাজ্যের মানুষের প্রয়োজনে বিধানসভায় বিল আনতে চাইলে, তার অনুমতি দেওয়া নিয়ে দেরি করায় অধিবেশন দু’দিন মুলতুবি রাখতে হয়, যা রাজ্যের পরিষদীয় ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এদিন নাম না করে বিজেপির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারা দেশেই সমান্তরাল প্রশাসন চলছে। মহারাষ্ট্রের চেয়ে বাংলায় একশোগুণ বেশি করে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই তা মেনে নেওয়া হবে না। এজন্য লড়তে হলেও তিনি প্রস্তুত।
অধিবেশন বন্ধ। তা সত্ত্বেও রাজ্যপাল ধনকার এদিন সকালে বিধানসভায় গিয়েছিলেন। ওই ঘটনার উল্লেখ করে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থবাবু বলেন, রাজ্যপাল যা করছেন, তাতে তাঁর পদের গরিমা তিনি নিজেই নষ্ট করছেন। তিনি চাইলে কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর যেতে পারতেন। বিধানসভা বন্ধ, অথচ সেখানে গেলেন। কী তার কারণ, বোঝা গেল না। তাঁর পদটি সাংবিধানিক। কিন্তু তাঁর আচরণ প্রশাসনিক প্রধানের মতো। পার্থবাবুর মতে, তিনি রাজনীতি করতে চাইলে করতেই পারেন। কিন্তু সাংবিধানিক পদে থেকে নির্বাচিত সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন, এটা তাঁর পদের প্রতি অবমাননার শামিল।
এদিন বিধানসভায় রাজ্যপালের আসার ঘটনায় অবশ্য আপত্তির কিছু দেখছেন না বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, কোনও ব্যক্তি নন, রাজ্যপালের পদটিকে অসম্মান করা উচিত নয়। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যপাল যাচ্ছেন শুনেই সরকার কেন পালিয়ে বেড়াবে তা বোধগম্য নয়। তিনি নাকি বিধানসভার লাইব্রেরি দেখতে চেয়েছেন। তাতে সরকারের আপত্তির কারণ কী, তা জানা গেল না। তবে, রাজ্যপাল পদ টিকিয়ে রাখার পক্ষপাতি তাঁরা নন বলে জানান সুজনবাবু। তিনি বলেন, তবে যতদিন এই সাংবিধানিক পদটি রয়েছে ততদিন তাকে মান্যতা দেওয়া উচিত।