বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সরকারপক্ষ তাঁর এই কর্মসূচি আদৌ সোজাসাপ্টা কোনও উদ্দেশ্যে বলে মনে করছে না। তাই রাজ্যপালকে এদিন শেষ পর্যন্ত বিধানসভায় কে স্বাগত জানাবেন বা ভবনে তিনি থাকাকালীন অধ্যক্ষ বা পরিষদীয়মন্ত্রী সহ সরকারপক্ষের কেউ আদৌ উপস্থিত হবেন কি না, বুধবার রাত পর্যন্ত তা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। এমনকী, বিধানসভার সচিব বা অন্য কোনও পদস্থ অফিসাররাও অন্তত রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে ভবন ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য ওই সময় হাজির হবেন— এমন গ্যারান্টিও পায়নি রাজভবন। তবে বিধানসভার তরফে সন্ধ্যায় রাজভবনকে মৌখিক বার্তা পাঠানো হয়, অধ্যক্ষ পূর্ব নির্ধারিত কাজে ব্যস্ত থাকবেন বলে ওই দিন সদনে আসবেন না। গোড়ায় রাজ্যপালের সফর নিয়ে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পর হঠাৎ বিধানসভা কর্তৃপক্ষের এই মত বদলের কারণ লিখিতভাবে চাওয়া হলেও অনেক রাত পর্যন্ত তা পাঠানো হয়নি রাজভবনে। তা না আসায় রাজ্যপালও তাঁর কর্মসূচিতে অনড় থাকার পক্ষেই মত দেন আধিকারিকদের। প্রসঙ্গত, শুক্রবার অধিবেশনের আলোচ্যসূচি স্থির করার জন্য পূর্ব নির্ধারিত কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারের বদলে এই বৈঠক অধিবেশন শুরুর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় হবে বলে ঠিক হয়েছে।
রাজ্যপালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি নিয়ে যখন শোরগোল চলছে, তখনই রাজভবন থেকে তাঁর বিধানসভা ভবন পরিদর্শনের কথা জানিয়ে চিঠি যায় অধ্যক্ষের অফিসে। চিঠি পাওয়ার পরই সরকারপক্ষের মধ্যে প্রবল তৎপরতা শুরু হয়। প্রাথমিক আলোচনার পর অধ্যক্ষের অফিস থেকে রাজভবনকে ধনকারের এই কর্মসূচির ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু দুপুরের পর পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। অধ্যক্ষ এই সময় বিধানসভা ভবন ছেড়ে বাইরে কোথাও চলে যান। পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন অবশ্য দিনভর বিধানসভা ভবনে আসেননি। মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষকেও দুপুরের পর তাঁর অফিসে পাওয়া যায়নি। উপাধ্যক্ষ সুকুমার হাঁসদা এবং পরিষদীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী তাপস রায় অবশ্য তাঁদের অফিসে আসেন। সরকারপক্ষের এই পাঁচ কর্তার স্থায়ী অফিস থাকায় এঁরা সকলেই বা অন্তত কেউ একজন বৃহস্পতিবার রাজ্যপালকে স্বাগত জানাবেন বলে ধরে নিয়েছিলেন বিধানসভার কর্মীরা। তবে সন্ধ্যার সময় তাঁদের মধ্যে কানাঘুষোয় চাউর হয়, ওইদিন ‘পূর্ব নির্ধারিত’ কাজের জন্য নাকি এঁরা কেউ এই দায়িত্ব পালন করবেন না। এমনকী, সচিব বা অন্য বেশ কয়েকজন পদস্থ আধিকারিকও একই কারণে ওই সময় নাও থাকতে পারেন।
শাসক শিবির যে রাজ্যপালের বিধানসভা ভবন দর্শনের কর্মসূচিতে আদৌ সন্তুষ্ট নয়, সেটা এদিন চাঁচাছোলা ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং পার্থবাবু। ধনকারকে ‘পদ্মপাল’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, স্থাপত্য দেখার জন্য উনি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে যান। বই পড়ার জন্য ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যেতে পারেন। এসব না করে উনি বরং তাঁর কাছে পড়ে থাকা বিলগুলি ছেড়ে দিয়ে অধিবেশন চালাতে সহায়তা করুন। রাজ্যপাল এদিন অবশ্য বলেন, বিল নিয়ে তিনি কোনওরকম কালক্ষেপ করছেন না। দিনে ১৬ ঘণ্টার জায়গায় ১৭ ঘণ্টা কাজ করতেও রাজি। আমি ক্ষমতার মোটেও অপপ্রয়োগ করতে চাই না। তবে আমি রবার স্ট্যাম্প রাজ্যপালও হতে চাই না। রাজভবনকে ডাকঘর মনে করা উচিত নয়।