গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
সরবরাহও ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। শহরের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে যেখানে ২৫-৩০ থেকে ৫০টিরও বেশি পেঁয়াজ বোঝাই লরি মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র, কর্ণাটক থেকে আসে, সেখানে মঙ্গলবার থেকে দুই-তিনটি লরি আসছে। ব্যবসায়ী মহলের বক্তব্য, মহারাষ্ট্র থেকে বেশি পরিমাণে নতুন পেঁয়াজের জোগান না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার বিশেষ আশা নেই। নতুন বছরের শুরুতে জোগান বাড়তে পারে।
পেঁয়াজের মতো অতটা না হলেও অন্যান্য সব্জির দাম অগ্নিমূল্য। হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা আরও বাড়ানোর অনুমতি পাওয়ার পর থেকে আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। খুচরো বাজারে জ্যোতি আলুর দাম ১৮ থেকে বেড়ে ২০ টাকার আশপাশে চলে এসেছে। হিমঘর থেকে বের হওয়ার পর আলুর দাম কেজিতে এক-দুই টাকা বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রকোপে শীতের সব্জির দামও চড়া। অধিকাংশ সব্জি এখনও ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচালঙ্কার দাম কলকাতার খুচরো বাজারে কেজি প্রতি ১৪০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। যেখানে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত কাঁচালঙ্কা মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। সব সব্জির ক্ষেত্রেই অধিকাংশ চাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। ফড়েরা লাভের গুড় খেয়ে চলে যাচ্ছেন।
আকাশছোঁয়া দামের মধ্যে রাজ্য সরকার সুফল বাংলার মাধ্যমে মাত্র ৫৯ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে খবর, এখন কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। পাইকারি বাজারের দরেই পেঁয়াজ কিনছে দপ্তর। শহরের একশোটি বাজারের সামনে ছোট লরি করে নিয়ে গিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এর মাধ্যমে খুব বেশি লোকের কাছে পৌঁছনো যে যাচ্ছে না, তা দপ্তরের আধিকারিকরা স্বীকার করছেন। কলকাতা পুরসভা এলাকার মধ্যে মোট ৩৫৮টি বাজার আছে। উত্তর কলকাতায় হাতিবাগানের পর কোনও বাজারে এখনও পেঁয়াজের গাড়ি যায়নি। উত্তর কলকাতার আরও কিছু এলাকায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানিয়েছেন। সরকারি গাড়ি থেকে পেঁয়াজ কেনার জন্য লম্বা লাইন পড়ছে। বিক্রির পরিমাণ তিনশো বা পাঁচশো গ্রামে বেঁধে দিয়েও সবাইকে পেঁয়াজ দেওয়া যাচ্ছে না। লম্বা লাইনে অশান্তিও বাধছে। কৃষি বিপণন দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কেউ কেউ পরিবারের একাধিক সদস্য পেঁয়াজ কেনার লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই পেঁয়াজ এসে গেলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মাসের ১০ তারিখের পর মুম্বই বন্দরে মিশর থেকে আমদানি করা প্রায় ৬ হাজার টন পেঁয়াজ পৌঁছতে পারে। সেখান থেকে প্রতি সপ্তাহে দু’শো টন করে চার সপ্তাহে মোট আটশো টন পেঁয়াজ নাফেডের মাধ্যমে এ রাজ্যে আসার কথা। পেঁয়াজের দাম কত পড়বে, সেটা এখনও ঠিক হয়নি। তবে কলকাতায় কেজি প্রতি ৬০ টাকার মতো দাম হতে পারে। বিদেশি পেঁয়াজ এলে তা সুফল বাংলা ছাড়াও রেশন দোকানের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে বিক্রির পরিকল্পনা আছে সরকারের।- ফাইল চিত্র