বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিন প্রশ্নোত্তর পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক গীতারানি ভুঁইঞা বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। কেন্দ্রীয় সরকার কোনও আর্থিক সাহায্য করেছে কি না, সেটাও তিনি জানতে চান। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ খান প্রথমে প্রশ্নের উত্তর দেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীর পর বুলবুল নিয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা সাংঘাতিক ঝড় ছিল। বড় ঘটনা ঘটতে পারত। প্রায় ১ লক্ষ ৭৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়। আগামী দিনে এই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার আরও কেন্দ্র তৈরি করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আইলার পর দেড়শো-দু’শো আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে আরও ন’টি মৃত্যু বেড়ে ১৬ হয়। ঝড়ে নৌকা উল্টে ন’জন মারা গিয়েছেন। প্রশাসন নৌকা থেকে লোক সরানোর নোটিস দিয়েছিল। তা মানলে এই মৃত্যুগুলি হতো না। নৌকা পাহারা দেওয়ার জন্য এদের রাখা হয়েছিল। এটা ঠিক হয়নি। এর জন্য মামলা করা হয়েছে। মৃতদের দুই লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যু কম হলেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পান, সব্জির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বুলবুলের জন্য ধানের ক্ষতি নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। বাংলায় প্রচুর ধান হয়। উদ্বৃত্ত ধান থাকে। ধান কম হবে বলে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। এতে আড়তদারদের সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। ধান নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। পাকা ধান যা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলি যাতে বিকল্পভাবে ব্যবহার করা যায়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হয়েছে। চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে অর্থ দপ্তর ১২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা বিমা থেকেও ক্ষতিপূরণ পাবেন। আগে কেন্দ্রীয় সরকার বিমার প্রিমিয়ামের ২০ শতাংশ টাকা দিয়ে নিজেদের সাফল্যর প্রচার করত। এখন রাজ্য সরকারই বিমার পুরো প্রিমিয়ামের টাকা দেয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে যে প্রায় ৫ লক্ষ বাড়ি নষ্ট হয়েছে, সেগুলিকে বাংলা আবাস যোজনায় নির্মাণ করে দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ লক্ষ কিট দেওয়া হচ্ছে। এতে স্টোভ, বাসন, পোশাক, শিশু খাদ্য প্রভৃতি থাকছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় ৪০ হাজার হ্যারিকেন এবং প্রতি পরিবারকে পাঁচ লিটার করে কেরোসিন দেওয়া হয়েছে।