রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
গত লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই এ রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে বেশি মাত্রায় তৎপরতা শুরু করেছে মিম। সংখ্যালঘু আবেগকে উস্কে দিতে জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অংশে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বৈঠকি সভা, পথসভা, মিছিল এবং পোস্টারিং শুরু করেছে তারা। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল, জলঙ্গি, রানিনগর, সাগরদিঘি সহ কয়েকটি এলাকায় হায়দরাবাদ থেকে মিম-এর লোকজন এসে সংখ্যালঘু আবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টাও চালাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটির মধ্যে দুটি লোকসভা আসন দখল করে সাফল্যের সঙ্গে জোড়াফুল ফুটিয়েছে তৃণমূল শিবির। এদিন সাগরদিঘির জনসভার আকার এবং বহর প্রমাণ করেছে, জেলার মানুষ এখন মমতার উপরই আস্থাশীল, মুখ্যমন্ত্রী তাদের ভরসাস্থল। সেই আশা ও ভরসায় যাতে বহিরাগত কেউ এসে চিড় ধরাতে না পারে, সে কারণেই বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে ‘মিম’ সংক্রান্ত কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন মমতা। বলেছেন, আপনারা ভরসা করেছেন। ভরসা রাখুন, আস্থা রাখুন। নতুন করে গড়ে দেখিয়ে দেব, কী কী করা যায় মুর্শিদাবাদে।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা হিন্দু আর মুসলমান- একই বৃন্তে দুটি কুসুম। আগুন লাগলে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান কেউ রেহাই পাব না। আমাদের একসাথে থাকতে হবে, একসঙ্গে চলতে হবে। উপচে পড়া জনস্রোত সিংহগর্জনে সায় দিয়েছে মমতাকে। উচ্ছ্বাসের করতালির মধ্যেই তিনি বলেন, একসাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। রাষ্ট্রকে করতে হবে শক্তিশালী। সাগরদিঘির সভা সেরে বহরমপুর শহরে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পুলিস আধিকারিকদের জন্য রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের নির্দেশ— হায়দরাবাদের পার্টি এসে সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা দিচ্ছে। অনেকরকম কথা বলছে। ইন্ডোর মিটিং করছে। অনুমতি দেওয়ার আগে এসব খেয়াল রাখবেন আইসি-ওসি’রা।
জীবিকার তাগিদে কাশ্মীরে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল সাগরদিঘি থানার বাহালনগরের করিমউদ্দিন শেখ, নইমুদ্দিন শেখ, মহম্মদ রফিক শেখ, রফিকুল শেখ এবং মুরসলিম শেখের দেহ। গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন আরেক বাসিন্দা জহিরুল শেখ। এদিন সাগরদিঘির সভা সেরে বাহালনগরে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখতে উপচে পড়ে গ্রামবাসীদের ভিড়। জঙ্গিহানায় মৃত করিমউদ্দিনের বাড়ির উঠোনে চৌকি পেতে শোকসন্তপ্ত পরিজনদের পাশে বসিয়ে আশ্বস্ত করেন তিনি। জানিয়ে দেন, এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের পর আরও ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে পরিবারগুলিকে। যাতে তারা ছোটখাট ব্যবসা করে চালাতে পারে। এরই পাশাপাশি হতভাগ্য দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য বাংলা আবাস যোজনায় ঘর তৈরি করে দেওয়ার বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে। গ্রাম ছেড়ে ফেরার পথে দেখা হয় গুলিতে জখম হওয়া জহিরুলের সঙ্গে। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার নিয়েছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, আরও এক লক্ষ টাকা পাবেন জহিরুল। সঙ্গে একটি চাকরি। যে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান।