উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
বুধবার উত্তর কলকাতার হাতিবাগান, শ্যামবাজার এবং নতুনবাজারে ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন নানা মতামত পাওয়া গেল। এই তিনটি বাজারে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের দরদাম সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা সম্প্রতি অভিযান চালিয়েছেন। তারপর এই বাজারগুলিতে দাম কিছুটা হলেও কমেছে। এদিন দুপুরে হাতিবাগান বাজারের ভাঙা হাটে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল সব্জি বিক্রেতা হরিমোহন প্রসাদ, প্রদীপ ঘোষদের সঙ্গে। প্রদীপবাবু বলেন, পটল এদিন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যা দু’দিন আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা। বেগুন কয়েকদিন আগে ৬০ টাকা ছুঁলেও এদিন হাতিবাগানে তা ৪৫-৫৫ টাকায় মিলেছে। জ্যোতি আলু পাওয়া গিয়েছে ২০ টাকা কিলো দরে, যা ২২ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে ফুলকপির দামে কোনও হেরফের হয়নি। মাঝারি সাইজের ফুলকপি ৩০ টাকার কমে এদিনও পাননি ক্রেতারা। হরিমোহনবাবুর কথায়, দাম তো আমরা বাড়াইনি। ফলে কেন কমল, তাও বলতে পারব না। আমরা যে পাইকারি দরে কিনে আনি, তার চেয়ে সর্বোচ্চ ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করি। এর মধ্যে ভালো, খুব ভালো, মোটামুটি—এরকম দু’-তিনটি ভাগে বেছে নিয়ে সব্জি বিক্রি করেন অনেকে। ফলে দরদামের ব্যাপারটা কীরকম বাড়ছে বা কমছে মেলাতে গেলে সব্জির ‘কোয়ালিটি’র বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। দু’জনেই মনে করেন, মাঠ থেকে সব্জি যে পথ ধরে পাইকারি বাজারে আসছে, তার মধ্যে নজরদারি বাড়ালে ফাটকাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা তো ১০-১৫ কিলো সব্জি প্রতিদিন কোলে মার্কেট বা পুরনো উল্টোডাঙা বাজার থেকে কিনে আনি।
তবে হাতিবাগানের এই ব্যবসায়ীরা যা-ই বলুন না কেন, এখান থেকে কিছুটা দূরে রবীন্দ্র সরণীর নতুন বাজারে প্রত্যেকটি সব্জির দাম হাতিবাগান ও শ্যামবাজারের তুলনায় ৫-১০ টাকা বেশি। নতুন বাজারের সব্জি বিক্রেতা প্রকাশ ওঝা বলেন, হাতিবাগানে বেশ কিছু পাইকারি বিক্রেতা সরাসরি সব্জি দিয়ে যায়। ওই বাজারেই তিনটি আড়ত আছে। ফলে অনেক সময় বহনের খরচ ওদের লাগে না। আমরাও কেনা দামের থেকে বড়জোর ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করি। কেউ যদি বলেন, খুচরো বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছেন, তাহলে তিনি ঠিক বলছেন না। এমনিতে দুর্যোগ কেটে গিয়ে ক’দিন আবহাওয়া ভালো হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবে একটু দাম কমেছে সব সব্জিরই। এখানে বাজার করতে আসা চিন্ময় সাধুখাঁ বলেন, সরকারের নজরদারিতেই যদি দাম কমে থাকে, তাহলে তারা সেটা আগে থেকে করেনি কেন? কাউকে কাউকে অতিরিক্ত লাভ পাইয়ে দেওয়ার পর কি সরকার সক্রিয় হবে?
টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে এই তিনটি বাজারেই অভিযানে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, দাম কমেছে সব সব্জিরই। আমরা নজর রাখছি, পাইকারি দামের সঙ্গে যেন খুচরোর দামের খুব বেশি ফারাক না হয়। কোলে মার্কেট থেকে পাইকারি দর টুকে নিয়ে তারপর যাচ্ছি বাজারগুলিতে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। তবে সিম, গাজর, মুলোর দাম এখনও তাঁরা সেভাবে কমাতে পারেননি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু।