নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা এবং উচ্চশিক্ষার জন্য রাজে এখন আর পরিকাঠামোর কোনও অভাব নেই। প্রচুর নতুন কলেজ যেমন হয়েছে, তেমনি হয়েছে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আগে যেমন অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী ভিনরাজ্য বা বিদেশে পড়তে যেতেন, এখন আর তেমনটা করার দরকার পড়ে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনার যাবতীয় ব্যবস্থা রাজ্যেই মজুত রয়েছে। শনিবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর আয়োজিত ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করে এমন দাবি করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, এমন বিজ্ঞান মেলা করার মূল উদ্দেশ্য হল একেবারে অল্প বয়সেই ছাত্রছাত্রীদের মন কুসংস্কারমুক্ত করে গড়ে তোলা। এই বিজ্ঞান মেলায় রাজ্যের সব জেলার প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। প্রত্যেক জেলার স্টলে স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীদের তৈরি বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক মডেল প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর মধ্য থেকে সেরা চিহ্নিত করে তাদের পুরস্কৃত করা হবে। এ প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, প্রতিযোগিতা ছাড়া মেধার উৎকর্ষ প্রতিফলিত হয় না। তাই প্রতিযোগিতা রাখতে হবে। আর মনে রাখতে হবে, হারা-জেতাটা বড় কথা নয়, অংশগ্রহণ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
রবিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এই ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলা চলবে কাল, মঙ্গলবার পর্যন্ত। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আয়োজক দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষা ও প্রযুক্তিবিদ। অরূপবাবু বলেন, এতদিন জেলাস্তর ও তারপর রাজ্যস্তরে বিজ্ঞান মেলা করা হত। এবারই প্রথম এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ব্লক, পুরসভা এবং বরোস্তরে। এই পর্বে মোট ৫ হাজার ৭৪৪টি মাধ্যমিক স্কুল, ২ হাজার ৯৯১টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল, ১৯৮টি কলেজ এবং আটটি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ায় সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার ১২২ ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানান অরূপবাবু। কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলির কোনও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই মেলায় আসতে চাইলে তাঁর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে বিনা খরচে পরিবহণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চায় বাঙালির একটি সুদীর্ঘ এবং গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে এই ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানচর্চাকে শুধুমাত্র শ্রেণীকক্ষের মধ্যে আটকে রাখলে চলবে না। সমাজ ও মানুষের কাজে লাগে, এরকম নিত্যনতুন আবিষ্কার ও গবেষণায় মন দিতে হবে। এর ফলে বিজ্ঞানও সরাসরি পুষ্ট করবে অর্থনীতিকে।