পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হতিবাগান এলাকার তেলিপাড়ার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী শৈবালকুমার ঘোষ এদিন টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে সহ অভিযানে আসা সরকারি দলের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক জুড়ে দেন। ক্ষুব্ধভাবে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আাসার আগে থেকেই তো সব্জির বাজার এরকম চড়া চলছে। এখন তো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে সব কিছু। ফাটকাবাজি না চললে এটা হতে পারে না। সাধারণ গরিব খুচরো বিক্রেতাকে ধমকে এখন কী লাভ হবে? বড় বড় ফড়েদের ধরছেন না কেন? রবীন্দ্রনাথবাবু সহ বাকিরা অবশ্য বলার চেষ্টা করেন, ‘বুলবুল’-এর জন্য সব সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে— এমন একটা খবর চাউর হয়ে যাওয়ায় সেই সুযোগটা খুচরো বিক্রেতারা নিচ্ছেন অনেক ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, হাতিবাগানের বাজারে সব্জির যা দাম, কিছুটা দূরের শ্যামবাজারের বাজারে তা সবক্ষেত্রেই ৫-১০ টাকা কম। এটা তাহলে কেন হচ্ছে বলুন! সব্জি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে কয়েকদিন আগে টাস্ক ফোর্সকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর কলকাতার খুচরো বাজারগুলিতে অভিযান চলছে। রবিবার অভিযানকারী দল শ্যামবাজার ও হাতিবাগান ঘুরে দেখে। হাতিবাগানের বাজারে এদিন উচ্ছে বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৯০-১০০ টাকায়। ছোট সাইজের ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকায়। বাঁধাকপি এক কেজির দাম পড়েছে ৪০ টাকা। জ্যোতি আলু ২২ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি প্রতি দরে বিকিয়েছে। গাজর বিকোচ্ছে ১০০ টাকায় এক কেজি। আর মুলোর দাম ৪০ টাকা। পটল ৬০ টাকা, সীম ৮০ টাকা, ক্যাপসিকাম ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে হাতিবাগানে। পাশের শ্যামবাজারে প্রত্যেকটি সব্জির দাম আবার কিছুটা হলেও বেশি। নাগরিকরা বলছেন, দক্ষিণ কলকাতার বাজারগুলিতে এগুলির দাম আরও বেশি। এই অবস্থায় এরকম অভিযানে কতটা কাজের কাজ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন একাধিক নাগরিক।
শ্যামবাজারে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল আদতে বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা তপন হাজরারা সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতে সব্জি সস্তা হয় বলে এতদিন জেনে এসেছি। এত দাম তো কোনও বছর হয়নি। বর্ষার সময়ও এত দাম হয়নি জিনিসপত্রের। এখন তো কোনওকিছুতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। দাম যে খুচরো বাজারে বাড়াচ্ছে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী, সেই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর টাস্ক ফোর্সের আরেক সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ ভেন্ডরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল দে। তিনি বলেন, ‘বুলবুল’-এ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও সীমের। কলকাতার বাজারে প্রচুর পরিমাণ ফুলকপি আসে ভাঙড় থেকে, বাঁধাকপি আসে বসিরহাট এবং সীম আসে বনগাঁ এলাকা থেকে। এই জায়গাগুলিতে ‘বুলবুল’-এর ধ্বংসলীলা বেশি হওয়ায় বাজারে তার প্রভাবও বেশি পড়েছে। কিন্তু এইসব কারণে দাম বাড়বে বলে চাউর হয়ে যাওয়ায় খুচরো বিক্রেতারা সুযোগ নিচ্ছেন। যে সব্জি লাভ রেখেও বর্তমান দামের তুলনায় ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি করা যেত, তা তাঁরা ঘূর্ণিঝড়ের দোহাই দিয়ে করছেন না। তবে প্রশাসনের নজরদারি এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই পরিস্থিতির বদল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।