কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের কাজ যেমন ক্রেতাদের সচেতন করা, তেমন তাঁদের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে কি না, তা দেখভালের দায়িত্বও তাদের। এই দপ্তরের আওতায় থাকা লিগ্যাল মেট্রোলজি বিভাগ এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। রাজ্যের বাজারগুলি পরিদর্শন করেন এই বিভাগের অফিসাররা। সেখানে যে ওজন যন্ত্র ও বাটখারার মতো পরিমাপকগুলি আছে, সেগুলি নিয়মিত পরীক্ষা করার কথা তাঁদের। শুধু ওজনই নয়, যে কোনও পরিমাপ সঠিক হচ্ছে কি না, তা পরখ করে দেখেন তাঁরা। পরীক্ষার পর দেওয়া হয় শংসাপত্র। সরকারি হারে নেওয়া হয় ফি। যদি সেখানে কোনও ঠকানোর কারবার চলে, তাহলে জরিমানা বা শাস্তির ব্যবস্থা আছে সরকারের তরফে। দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এ রাজ্যের প্রায় ৫ হাজার ৪০০টি বাজারে নিয়মিত ওই পরীক্ষা চালানো হয়। এর বেশি সংখ্যক বাজারও থাকতে পারে। কিন্তু অন্তত ১০টি দোকান আছে, এমন এলাকাকেই সাধারণত বাজার হিসেবে দেখে লিগ্যাল মেট্রোলজি বা বৈধ পরিমাপ বিভাগ।
দপ্তরের কর্তাদের দাবি, বাজারগুলিতে হানা দিয়ে ও পরিমাপক যন্ত্র পরীক্ষা করে তাঁরা যে টাকা আদায় করেছেন, তা আগের বছরের তুলনায় বেশি। তাঁদের দাবি, গত আর্থিক বছরে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যেখানে ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ১০১টি ট্রেডারের ক্ষেত্রে ওজন ও পরিমাপ পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেখানে শেষ সেপ্টেম্বরে সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩৩৫টিতে। গত বছর ওই সময়ে মোট আয় হয়েছিল ১০.৪১ কোটি টাকা। এাবার তা বেড়ে হয়েছে ১১.১৩ কোটি টাকা। গতবার সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল ২ হাজার ২৮০টি পরিমাপক। এবার তা হয়েছে ২ হাজার ৩৯৬টি। গতবার হানাদারি ছিল ৮৬৩টি জায়গায়। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২৩৪টি জায়গায়। দপ্তরের কর্তারা দাবি করেছেন, আদায় বৃদ্ধিতে সার্বিকভাবে ঝাঁপাচ্ছেন তাঁরা।
সেই আদায় বাড়ানোর লক্ষ্যেই অন্যান্য পরিমাপের পাশাপাশি পানশালাগুলিকেও নজরে রেখেছেন দপ্তরের কর্তারা। এখানকার এক কর্তার কথায়, আমরা আগে পেগ মাপার বিষয়ে ততটা উৎসাহী ছিলাম না। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে সেখানেও নিয়মিত নজরদারি বেড়েছে। কারণ, পানশালাগুলিতে যে সুরা বিক্রি হয়, তার দাম যথেষ্ট। সেখানে যদি ক্রেতাকে ন্যায্য পরিমাপের কম দেওয়া হয়, তাহলে তাঁর স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। আমরা তা আটকাতে চাই। পেগ বা সুরাদান পাত্রটি তৈরি হয় রুপোর স্তর দিয়ে। কারণ তার সঙ্গে সুরা বা অ্যালকোহলের কোনও রাসায়নিক বিক্রিয়া হয় না। সেই পেগে ৩০ বা ৬০ মিলির যে পরিমাপ থাকে, আসল পরিমাপের থেকে সেটি কম কি না, তা যাচাই করে দেখার কথা সাধারণত চিন্তা করেন না ক্রেতা। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের সামনেই পেগ মেপে দেওয়া হয়। কিন্তু যদি ওই পাত্রটিতেই কারচুপি থাকে, তাহলে পরখ করে দেখার পরিকাঠামো থাকে না সাধারণ ক্রেতার কাছে। সেই সুযোগটি যাতে পানশালাগুলি না নিতে পারে, তার জন্য বছরে একবার পেগের পরিমাপ পরখ করে সেই মতো সার্টিফিকেট দেওয়া হয় দপ্তরের তরফে। কিন্তু যদি পেগের মাপ ঠিক রেখে, আসল সুরার বদলে অন্য কিছু পরিবেশন করা হয়? অর্থাৎ সুরাতেই যদি ভেজাল থাকে? দপ্তরের কর্তাদের উত্তর, মদিরতায় ভরপুর ক্রেতাকে যদি ভেজাল পানীয় পরিবেশন করা হয়, তাহলে তার বিহিত করার দায়িত্ব বা অধিকার লিগ্যাল মেট্রোলজি বিভাগের নেই। ক্রেতা যদি মনে করেন, তিনি ভেজাল পান করছেন এবং তিনি যদি তা প্রমাণ করতে সক্ষম হন, তাহলে তাঁকে সুরাহা দেওয়ার জন্য ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের নিজস্ব বিভাগ আছে। আছে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতও।