গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
যাঁরা মিষ্টিপ্রেমী, তাঁরা জানেন প্রকৃত রসগোল্লা যেমন তেমন করে তৈরি হওয়ার নয়। চিনির মোটা রসে ডোবানো হাল্কা হলদেটে রঙের গোলাকার মিষ্টি মানেই রসগোল্লা নয়। তাতে যদি স্টার্চ বা সুজি থাকে, তাহলে তো স্বাদের সর্বনাশ। রসগোল্লা হবে শুধু ছানার। সেখানে ভেজালের ঠাঁই নেই।
জিআই নিয়ে রসগোল্লার লড়াই ছিল একেবারে আলাদা। রসগোল্লা তাদের, এমন দাবিদার হয়ে উঠেছিল প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা। তাদের দাবি, যে মিষ্টি বছরের পর বছর ধরে স্বয়ং জগন্নাথদেবকে নিবেদন করা হচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ কী করে দাবি করে যে, রসগোল্লার উৎপত্তি বাংলায়? বিষয়টি নিয়ে চলে আইনি লড়াই। শেষ অবধি জয় হয় বাংলার। নবীনচন্দ্র দাশের আবিষ্কারকেই স্বীকৃতি দেয় তারা। ওড়িশা অবশ্য হাল ছাড়েনি। যে মিষ্টি নিয়ে তাদের এত গরিমা, তাকেও ‘ওড়িশার রসগোলা’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্র।
যে ‘বাংলার রসগোল্লা’ নিয়ে এত হইচই, সেই স্বীকৃতির উদযাপন আজ ঘটা করেই হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রকুমার পাল বলেন, আমরা জেলায় জেলায় রসগোল্লা উৎসবের আয়োজন করেছি। সবাই যে স্পঞ্জের রসগোল্লা তৈরি করে, তা নয়। অনেকে একটু পুরনো ঘরানার ওজনদার রসগোল্লাও পছন্দ করেন। পছন্দ যাই-ই হোক না কেন, আমরা সবাইকে রসগোল্লা খাইয়ে দিনটি উদযাপন করতে চাই। কলকাতা তো বটেই, জেলায় জেলায় আমাদের সমিতির সদস্যরা বিনামূল্যে মিষ্টি খাওয়াবেন। সবাইকে হয়তো খাওয়ানো যাবে না। যেহেতু আজ শিশু দিবস, তাই কচিকাঁচাদেরই আগে সুযোগ দেওয়া হবে, জানিয়েছেন রবীন্দ্রবাবু।
কলকাতার বাগবাজারে রসগোল্লার আবিষ্কর্তা নবীনচন্দ্র দাশের মূর্তিতে মালা দেওয়ার পাশাপাশি রসগোল্লা নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে সমিতি। নবীনচন্দ্র দাশের উত্তরসূরি এবং কে সি দাশের কর্ণধার ধীমান দাশ বলেন, ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেন সহ বিশিষ্টরা হাজির থাকবেন। এদিন সকালে ধীমানবাবুরা নিজেরাই পথ শিশুদের বিনা পয়সায় রসগোল্লা খাওয়ানোর পাশাপাশি তাদের হাতে পড়াশোনার সামগ্রী তুলে দেবেন।
তবে যেখানে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর রসগোল্লার জিআই আদায় করেছে, সেখানে সরকার কেন দিনটি উদযাপনে পিছিয়ে গেল, তা নিয়ে ধন্দ কাটছে না ব্যবসায়ীদের। মোহরকুঞ্জে যে রসগোল্লা উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল দপ্তর, তার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। দিন কয়েক আগে দপ্তরের প্রধান সচিব বদলি হয়ে যাওয়ায় সেই উদ্যোগে জল পড়ল কি না, তা বুঝতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।