গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
ডেঙ্গু নিয়ে ২০১৭ সালের উচ্চ আদালতের নির্দেশমতো রাজ্য যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবারের শুনানিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ওই বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ডেঙ্গু নিয়ে উচ্চ আদালতের এই কড়া অবস্থানের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে। ২০১৭ সালে একাধিক জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ডেঙ্গু নিয়ে আদালতের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ডিভিশন বেঞ্চ সেবার এই ভাইরাসঘটিত রোগে মৃত ২৪ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় থেকে রাজ্যকে রেহাই দিলেও, রোগ মোকাবিলায় একাধিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বলে সরকারকে। ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি বাসবী রায়চৌধুরী বনাম রাজ্য সরকারের মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছিল বেঞ্চ।
কী ছিল সেই নির্দেশে? সেই রায়ে উল্লেখ ছিল, জাতীয় ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের অতিরিক্ত অধিকর্তার নির্দেশমাফিক রাজ্য সরকার ২০১৩ সালেই একটি রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য ডেঙ্গুর দু’রকমের রোগ পরীক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এক, অ্যালাইজাভিত্তিক এনএস ১ অ্যান্টিজেন ডিটেকশন টেস্ট। যা রোগীর জ্বর হওয়ার প্রথম থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত করতে হবে। দুই, অ্যালাইজাভিত্তিক আইজিএম অ্যান্টিবডি ডিটেকশন টেস্ট। যা জ্বর হওয়ার পঞ্চম দিনের পর থেকে করতে হবে। সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের জন্য এই ব্যবস্থা থাকতে হবে। এজন্য রাজ্য অ্যালাইজা ভিত্তিক এনএস ১ অ্যান্টিজেন এবং আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষার কিট সমস্ত চিহ্নিত সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে রাখবে। তাছাড়া রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যকে ফিল্ড ওয়ার্কার নিয়োগ করতে হবে এবং মশার আঁতুড়ঘর নিশ্চিহ্ন করতে সমস্ত স্তরে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
সেবারের মামলায় আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ ছিল, এমন নির্দেশ থাকতেও রাজ্য তা কার্যকর না করাতেই এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবারও আইনজীবীরা একই অভিযোগ করে আদালতের কাছে জানিয়েছিলেন, রাজ্য উপযুক্ত পদক্ষেপ না করাতেই এবার ডেঙ্গুতে এমন ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
২০১৭ সালের রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে বলেছিল, যেখানেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে, সেখানে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসার গাড়ি পাঠাতে হবে। যাতে জ্বরাক্রান্ত রোগীদের রক্ত পরীক্ষায় অযথা দেরি না হয়। পাশাপাশি জানায়, শুধু সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর নয়, মামলাগুলিতে থাকা তথ্য, সুপারিশ ইত্যাদিকে ভিত্তি করেই এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া হল।
প্রসঙ্গত, এ বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা যে ৪৫ হাজার ছুঁতে চলেছে, তা মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার নেতৃত্বে বৈঠকের পর জানিয়েছিল স্বয়ং রাজ্য সরকারই। সরকারি হিসেব অনুযায়ী ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বর্তমানে ২৩ হলেও, শেষ হিসেব জুড়লে তা অনেকটাই বাড়বে বলে জানিয়েছে দপ্তরের এক পদস্থ সূত্র।