রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
তবে রাজভবন সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট পেলেই যে তিনি রাজভবনে আটকে থাকা বিলটিতে তাঁর সম্মতিসূচক স্বাক্ষর দিয়ে দেবেন, সেই আভাস কিন্তু এখনও মেলেনি। কারণ, নিজে আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও এ নিয়ে তিনি একাধিক বিশেষজ্ঞের মতামত নিচ্ছেন। এরপর যাঁদের তরফে বিলের ত্রুটি নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল, সেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকেও ফের তলব করতে পারেন বলে রাজভবনের আধিকারিকদের মনে হচ্ছে। এমনকী, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্যপাল বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন বলে মনে করছেন তাঁরা। রাজ্যপাল ধনকারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিলটি নিয়ে কিছু বিতর্ক ওঠায় আমি সব দিক খুঁটিয়ে যাচাই করে নিচ্ছি। এর ফলে ভবিষ্যতে অযথা জটিলতা দেখা দেবে না। আইন সচিব সরকারের তরফের যে ব্যাখ্যা আমায় মৌখিকভাবে দিয়েছেন তা শুনে আমি এখনও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। তাই ওঁকে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিতে বলেছি। সেটা পাওয়ার পর আমি এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।
সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ মেনে রাজ্য সরকার এই গণপিটুনি বিলটি বিধানসভার বিগত অধিবেশনে পেশ করে। প্রথমে যে বিলটি বিধায়কদের মধ্যে বিলি করা হয়েছিল, তাতে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা ছিল। কিন্তু পেশের দিন যে বিলটি অধিবেশন কক্ষে আনা হয়, তাতে মৃত্যুদণ্ডকেই সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিল পাশে বাধা না দিলেও বিরোধী বাম ও কংগ্রেস শিবির থেকে একই নম্বরে দুই ধরনের বিল নিয়ে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। সেজন্য তাদের তরফে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টি স্রেফ মুদ্রণ প্রমাদ এবং বিশেষজ্ঞদের অভিমত মোতাবেক এ নিয়ে কোনও আইনি জটিলতার সম্ভাবনা নেই বলে সরকারের তরফে তখন জানানো হয়। বিরোধী দুই পক্ষ অবশ্য এ নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়। তারপর রাজ্যপাল নড়েচড়ে বসেন। তিনি প্রথমে বিধানসভার সচিবের কাছে বিষয়টি জানতে চান। তারপর স্বরাষ্ট্র ও আইন দপ্তরের কাছেও ব্যাখ্যা তলব করেন। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, এই মুদ্রণ প্রমাদ ঘটেছে ‘দৃষ্টিবিভ্রমে’র কারণে। কিন্তু এই ব্যাখ্যায় রাজ্যপাল বেশ বিস্মিত হন। তারপরই তিনি সরাসরি আইন সচিবকে রাজভবনে তলব করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে আইন সচিব রাজ্যপালের সঙ্গে আধ ঘণ্টার উপর কথা বলে তাঁকে গোলমালের কারণ বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেন। যদিও তাঁর মৌখিক ব্যাখ্যায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে না পেরে আইন সচিবকে এবার লিখিত বক্তব্য পেশ করতে বলেছেন ধনকার।
আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, কম্পিউটার-ল্যাপটপে কাজ করার সময় এই দৃষ্টিবিভ্রমের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বাড়তি আর কোনও বিষয় নেই। আইন সচিব মুখে সে কথাই রাজ্যপালকে বলে এসেছেন। এবার তা লিখিত আকারে পাঠাবেন। তারপর বিল নিয়ে কী করবেন রাজ্যপাল, সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমাদের সরকার সমাজ থেকে এই জঘন্য অপরাধের সমস্যা দূর করতে বদ্ধপরিকর বলেই আমরা এই আইন আনতে চেয়েছি।