কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য সুব্রতবাবু বলেন, বাংলা সংবাদপত্র জগতের এক মহীরূহ ছিলেন বরুণ সেনগুপ্ত। বর্তমান পত্রিকা তৈরি এবং তাকে প্রতিষ্ঠিত করার নেপথ্যে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ২০০৮ সালে তাঁর প্রয়াণের পর ভগ্নী শুভা দত্ত দক্ষ হাতে পত্রিকাকে আরও কয়েক কদম এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। বহুবার ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। একজন মহিলা হিসেবে পত্রিকা সম্পাদনার কাজে কোনও অসুবিধার কথা বলতে শুনিনি। তবে খবরের বাইরেও অনেক কথা বলতেন উনি। সারা দিনের রুটিন কাজের চাপের পর ওঁর সঙ্গে সেই সব কথা বলে অনেকটা রিলিফ বোধ করতাম। সুব্রতবাবুর তুলনায় বয়সে নবীন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারীদের অনুভূতি আবার অন্যরকম। তাঁরা সকলেই প্রায় এক সুরে বলেছেন, সংবাদপত্রের সম্পাদক হিসেবে শুভাদি সাধারণত আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন না। উনি ছিলেন অনেকটা অভিভাবকের মতো। প্রয়োজনে কখনও বকাবকিও করেছেন বড় দিদি’র মতো। ওঁর এভাবে চলে যাওয়া সত্যিই মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। বিধাননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর সঙ্গেও অনেকদিনের সম্পর্ক শুভাদেবীর। কৃষ্ণাদেবী বলেন, ওঁর সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই নানা ধরনের গল্প হতো ফোনে।
শাসক শিবিরের পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফেও শোক জানানো হয় একইভাবে। প্রধান বিরোধীপক্ষ বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দূরবর্তী জেলায় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় ব্যক্তিগতভাবে না এলেও শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। তবে রাজ্য পার্টির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ও সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার সভাপতির তরফে পত্রিকা ভবনে এসে শুভাদেবীর মরদেহে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা দু’জনেই মহিলা সম্পাদক হিসেবে শুভাদেবীর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাও শ্রদ্ধা জানাতে এসে বলেন, শুভাদির সঙ্গে আমার নিয়মিত ফোনে কথা হতো। কয়েকবার দেখাও হয়েছে। খুব গল্প করতেন। নানা বিষয়ে জানতে চাইতেন। পুজোর আগেও কথা হয়েছে। হঠাৎ করে এভাবে যে চলে যাবেন, ভাবতেও পারছি না। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বিবৃতি জারি করে গভীর শোকপ্রকাশ করেন। বিমানবাবু বলেন, বর্তমান পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বরুণ সেনগুপ্তর সঙ্গে দীর্ঘ পরিচয় ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর শুভাদেবী পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। সেই সুবাদে ওঁর সঙ্গেও কয়েকবার কথা হয়েছে। ওঁর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। সূর্যবাবু বলেন, আমার সঙ্গে কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে ওঁর। ওঁর জীবনাবসানে শুভাদেবীর পরিবার ও বর্তমান পত্রিকার সহকর্মীদের সমবেদনা জানাচ্ছি। দলের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বর্তমান ভবনে এসে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলা সংবাদপত্র জগতে বর্তমান পত্রিকার একটি বিশেষ স্থান আছে। শ্রদ্ধা জানাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও এসেছিলেন পত্রিকা ভবনে। তিনি বলেন, পক্ষে হোক বা বিপক্ষে—মতামত যাই হোক না কেন, বরুণ সেনগুপ্তর পর সত্য প্রকাশের ধারাকে শুভা দত্ত বজায় রেখেছিলেন। শোক জানিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বর্তমান ভবনে দাঁড়িয়ে বলেন, বরুণদার পর যেভাবে এই পত্রিকাকে শুভাদেবী এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, বাংলা সংবাদপত্রের ইতিহাসে তা এক নজির। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, শুভাদির আকস্মিক মৃত্যুতে আমি শোকস্তব্ধ। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও কালান্তর পত্রিকার সম্পাদক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের দেবব্রত সরকার, মোহনবাগান ক্লাবের দেবাশিস দত্ত, ক্রীড়া প্রশাসক সুব্রত দত্ত প্রমুখ শ্রদ্ধা জানান পত্রিকা ভবনে এসে।