গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেন শুভা দত্ত। তাঁর এক কন্যা রূপাঞ্জনা দত্ত, জামাতা বিবেকানন্দ জগন্নাথন সহ বহু আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রয়েছেন। শুভাদেবীর মৃত্যুর খবরে রাজ্যের সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহল শোকস্তব্ধ। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রবীণ সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসু, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ। শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে যান আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর কর্ণধার অরূপ সরকার। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে আসা হয় শুভাদেবীর প্রিয় কর্মস্থল বর্তমান ভবনে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মরদেহ শায়িত ছিল সেখানে। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বর্তমান ভবনে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তাপস রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ মালা রায়, বিজেপি নেতা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিনহা, বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত ও জয়প্রকাশ মজুমদার, সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী ও কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের পক্ষে নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, অসিত মিত্র, অমিতাভ চক্রবর্তী, আরএসএস-এর মুখপাত্র জিষ্ণু বসু, প্রচারক বিপ্লব রায় সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট লোকজন। সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক সৃঞ্জয় বসু, আখবর-ই-মশরিক পত্রিকার সম্পাদক তথা সাংসদ নাদিমুল হক প্রমুখও শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, সিএবি, বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড, কলকাতা প্রেস ক্লাব, ক্যালকাটা জার্নালিস্টস ক্লাবের মতো সংস্থা এবং এই সময়, আজকাল, টাইমস অব ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকেও শুভাদেবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিন সন্ধ্যায় বর্তমান ভবন থেকে তাঁর শেষযাত্রা রওনা হয় দক্ষিণ কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। শেষ যাত্রায় অংশ নেন রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী হাজির ছিলেন। কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার সহ আরও বিশিষ্টজনদের তরফেও শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় শুভাদেবীকে। রাতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
শুভাদেবীর আদি বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কলকাতাতেই। পাঁচ ভাই-বোনের সর্বকনিষ্ঠা ছিলেন তিনি। বাবা স্বর্গত নির্মলানন্দ সেনগুপ্ত। মা স্বর্গতা রানিবালা সেনগুপ্ত। স্বামী প্রয়াত কুশলকুমার দত্ত। বর্তমানে যোগ দেওয়ার আগে সংসার সামলানোর পাশাপাশি একটি মন্টেসরি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। বরুণ সেনগুপ্ত ছিলেন তাঁর প্রিয় মেজদা। যাঁকে নিয়ে ওই ‘মেজদা’ শিরোনামেই বই লিখেছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের ১৯ জুন বর্তমান-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তর প্রয়াণের পর পত্রিকার দায়িত্বভার কাঁধে নেন শুভা দত্ত। মূল পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই বর্তমান গোষ্ঠীর অন্যান্য প্রকাশনার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। সেই সময়কালে বর্তমান-এর মাসিক পত্রিকা ‘সুখী গৃহকোণ’-এর সম্পাদনা করতেন। বরুণবাবু যে উচ্চতায় বর্তমানকে নিয়ে গিয়েছিলেন, দক্ষতার সঙ্গে সেই সাফল্য ধরে রাখেন তিনি। আমৃত্যু তিনি দৈনিক কাগজ, ম্যাগাজিন সহ সমগ্র পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর তরফে প্রকাশ করা হয় শোকবার্তা। শোক প্রকাশ করা হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফেও। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহ-সম্পাদক ডাঃ শচীন্দ্রনাথ সিংহ প্রমুখ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।