বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন বা হু)-এর সদস্যরা বানায় ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)। অর্থাৎ, তামাকজাত নেশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যা ভারত গ্রহণ করে ২০০৪ সালে। এদেশে তা কার্যকর হয় ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেই সূত্রে বারংবার তামাক থেকে নির্গত রাসায়নিক নিকোটিনের বিপদ আটকাতে সরকারি উদ্যোগ মাথাচাড়া দিলেও তা সময়ের সঙ্গে ঝিমিয়ে গিয়েছে। বস্তুত, ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল সরকার সংসদে জানিয়েছিল, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ, এমনকী সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় কি না, তা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক বিবেচনা করছে। ওই বছরের ২৭ জুলাই সেই সংসদই জানিয়েছিল, এই বিকল্প সিগারেটেও নিকোটিন থাকে। যা অন্যান্য তামাকাজাত সামগ্রীর মতোই নেশার জন্ম দেয়। এই প্রেক্ষাপটে ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিল, ই-সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা নিশ্চিত করতে হবে। অথচ, সেই সরকারই ২১ ডিসেম্বর সংসদকে জানায়, কীভাবে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা দিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আবার ২০১৯ সালের ১০ জুলাই সরকার বলেছে, বিষয়টি নেহাতই রাজ্যের। কারণ, এটা স্বাস্থ্যগত বিষয়।
এই প্রেক্ষাপটে ই-সিগারেট উৎপাদনকারী ও মামলাকারী একটি সংস্থার বক্তব্য, এই অর্ডিন্যান্স পণ্যটি নিয়ন্ত্রণের জন্য, নাকি তার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে, তা স্পষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত, এই সিগারেট ২০০৩ সালের ‘সিগারেট অ্যান্ড আদার টোব্যাকো প্রোডাক্টস (প্রোহিবিশন অব অ্যাডভার্টাইসমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেশন অব ট্রেড অ্যান্ড কমার্স, প্রোডাকশন, সাপ্লাই অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) আইনের মধ্যে উল্লেখিত রয়েছে। তাই আইনের চৌহদ্দির মধ্যে থেকে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে প্রশাসনিক নির্দেশ মারফত তা করা যায় না।
কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, অর্ডিন্যান্সটি জারি হয়েছে রাষ্ট্রপতির আইনগত ক্ষমতার নিরিখে। তাই এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। আসলে ই-সিগারেটে আসক্তির প্রবণতাকে সরকার অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে চায়। কীভাবে তা সম্ভব, সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে রাসায়নিক এই সিগারেটে ব্যবহৃত হয়, সেটিকে ‘ড্রাগ’ বা নেশার সামগ্রী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, বিচারবিভাগীয় হস্তক্ষেপে তা আটকে যায়। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে সরকারের অন্দরে ধারাবাহিক চিন্তা চলছে।
অন্যদিকে আরও এক ই-সিগারেট নির্মাতা দাবি করেছেন যে, এটি অগ্নি সংযোগে ব্যবহৃত সিগারেটে তুলনায় কম ক্ষতিকর। এর বিরুদ্ধে কল্পিত ভয় ধরানোর চেষ্টা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী রায়ে আদালত তাই বলেছে, দেশে ই-সিগারেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, তা সরকার জানে। কিন্তু, পরিস্থিতি
বিচারে অর্ডিন্যান্সের একটি অংশে স্থগিতাদেশ জারি করা হল। যেখানে উৎপাদকদের তাদের মজুত পণ্যের হিসেব দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু, এই পণ্য আপাতত বিক্রি করা যাবে না। সরকার ৫ নভেম্বর তার হলফনামা জমা করার পর ১৪ নভেম্বর হবে মামলার পরবর্তী শুনানি।