কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে মোট ৬ কোটি ১ লক্ষ রেশন গ্রাহক রয়েছে। তাদের জন্য ভর্তুকিতে চাল-গম সরবরাহ করে কেন্দ্র। তিন টাকা কেজি দরে চাল ও দুই টাকা কেজি দরে গম দেওয়া হয়। চালের উপর রাজ্য সরকার কেজিতে অতিরিক্ত এক টাকা ভর্তুকি দিয়ে রেশনে সরবরাহ করে।
গত কয়েক বছর ধরে গ্রাহকদের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণের সময়সীমা তিন মাস অন্তর দফায় দফায় বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে সময়সীমা ছিল, তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক। চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে খাদ্যমন্ত্রক রাজ্যগুলিকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছিল। রাজ্য খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা বৈঠকে গিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সহ কয়েকটি রাজ্যে এখনও আধার সংযুক্তিকরণ না হওয়ার জন্য খাদ্যমন্ত্রকের তরফে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আধার সংযুক্তিকরণ না হওয়া রেশন গ্রাহকদের খাদ্যে ভর্তুকির অর্থ দেওয়া জানুয়ারি থেকে বন্ধ করে দেওয়ার মতো চরম ব্যবস্থা এবার নেওয়া হতে পারে বলে কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকের ‘অন্ন বিতরণ’ পোর্টালের মাধ্যমে জানুয়ারি থেকে আধার সংযুক্তিকরণের উপর নজরদারি রাখা হবে। এই পোর্টালের মাধ্যমে রেশন দোকানে ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেলস (ই-পস) যন্ত্র চালুর উপর নজরদারি রাখছে কেন্দ্র। ওই যন্ত্র খুব কম সংখ্যায় চালু হওয়ায় কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক রাজ্যের খাদ্যদপ্তরকে কড়া চিঠি পাঠায়। এখন অবশ্য রাজ্যের প্রায় সব রেশন দোকানে এই যন্ত্র বসে গিয়েছে। রেশন কার্ড যন্ত্রে সোয়াইপও করা হচ্ছে।
ই-পস যন্ত্রে রেশন গ্রাহকদের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণ করতে হবে। এই যন্ত্রেই গ্রাহকের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই করে খাদ্যসামগ্রী দিতে হবে। আধার সংযুক্তিকরণের কাজ রেশন ডিলারদের মাধ্যমে করাতে চাইছে খাদ্যদপ্তর। পুজোর আগেই এব্যাপারে খাদ্যদপ্তর নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিন্তু কাজ শুরু করা যায়নি। রেশন ডিলারদের সংগঠনের তরফে আপত্তি করে বলা হয়, কীভাবে এই কাজ করতে হবে, সেটা তাঁদের জানা নেই। ডিলারদের আধার সংযুক্তিকরণের কোনও প্রশিক্ষণ নেই। ঠিক হয়, আপাতত এই কাজ হবে না। পুজোর পর ১৬ অক্টোবর থেকে ডিলারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে। নভেম্বর থেকে রেশন গ্রাহকদের আধার সংযুক্তিকরণ করা হবে। সেইমতো কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে। কিন্তু ডিলারদের তরফে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ সাড়া মিলছে না। প্রশিক্ষণপর্ব জোরকদমে চালানোর জন্য খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা শুক্রবার বৈঠক করেছেন। কিন্তু অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন ঠিক করেছে, আপাতত ডিলাররা প্রশিক্ষণ নেবেন না। সোমবার সল্টলেকে সারা রাজ্যের ডিলারদের যে বৈঠক ডাকা হয়েছে, সেখানে আধার নিয়ে কী করা হবে, সেব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য জানিয়েছেন, ডিলারদের কাছে আধার সংযুক্তিকরণ হবে। পাশাপাশি খাদ্যদপ্তরও এই কাজ করবে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রায় তিন কোটি রেশন গ্রাহকেরও আধার সংযুক্তিকরণ হচ্ছে।
প্রথম দিকে নীতিগতভাবে রেশনে আধার সংযুক্তিকরণের বিরোধী ছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এখন সরকার মনে করছে, এতে রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে। অন্যদিকে, ডিলারদের দাবি, আধার-ই-পস চালু করতে গেলে কমিশন বাড়াতে হবে।