পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শীর্ষ নেতৃত্বের পুনর্গঠন নিয়ে দলের ভিতরে যে ওজর-আপত্তি আছে, সেটা সদ্যসমাপ্ত রাজ্য কমিটির বৈঠকেই কিছুটা টের পেয়েছেন বিমান বসু-সূর্যকান্ত মিশ্ররা। যদিও এই সব আপত্তি বা দাবিকে তেমন আমল দিতে চাননি তাঁরা। দলকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য গৃহীত সিদ্ধান্তেই আপাতত তাঁরা অনড় মনোভাব নিয়েছেন। রাজ্য কমিটিই কেবল নয়, সম্পাদকমণ্ডলীর অন্দরেও ছেঁটে ফেলা এবং নবাগত নেতাদের নাম নিয়ে একশো শতাংশ ঐকমত্য তৈরি সম্ভব হয়নি। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মত মেনে দলীয় শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে কেউ ‘বিদ্রোহ’ দেখাতে যাননি। তবে সংখ্যায় কম হলেও রাজ্য কমিটিতে অন্তত বেশ কয়েকজন এ ব্যাপারে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন সাহস দেখিয়েই।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘকাল ধরেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে দলের প্রধান দুই গণসংগঠন কৃষকসভা ও সিটুর তরফে প্রতিনিধি ঠাঁই পেয়ে এসেছেন। সাধারণত গণসংগঠন দু’টির রাজ্য সভাপতি বা সম্পাদক এই সুযোগ পেতেন। বর্তমানে সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু এই কোটায় দলের সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন। তিনি এই রদবদলের কোপে পড়েননি সঙ্গত কারণেই। আবার ঝাড়াই-বাছাই অভিযানের জেরে সম্পাদকমণ্ডলী থেকে সদ্য ‘অব্যাহতি’ পাওয়া নৃপেন চৌধুরী বর্তমানে রয়েছেন কৃষকসভার রাজ্য সভাপতি পদে। কিন্তু বয়স ও অসুস্থতার কারণে বাদ পড়া নৃপেনবাবুর জায়গায় কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারকে সম্পাদকমণ্ডলীতে আনার ব্যাপারে চর্চাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু দলের ভিতরে ‘ঠোঁটকাটা’ বলে অনেক দিন ধরেই পরিচিত অমলবাবুর সঙ্গে আলিমুদ্দিনের ম্যানেজারদের তেমন সুসম্পর্ক নেই বলেই সকলে জানে। বারবার বলা সত্ত্বেও কৃষকসভার রাজ্য দপ্তরে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের কেউ নিয়ম করে কেন থাকেন না, তা নিয়ে স্বয়ং রাজ্য সম্পাদক হিসেবে সূর্যবাবু একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন। এবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে নৃপেনবাবু বাদ পড়ার পর কেন কৃষকসভা থেকে অমলবাবুকে সম্পাদকমণ্ডলীতে ঠাঁই দেওয়া হবে না, তা নিয়ে কয়েকজন প্রশ্ন তুললে জবাবি ভাষণে এই যুক্তিই সামনে আনেন সূর্যবাবু। একটি সূত্রের খবর, অবিভক্ত বর্ধমান জেলার ১৩ বছরের সম্পাদক অমলবাবুকে কলকাতায় কৃষকসভার রাজ্য দপ্তর হরেকৃষ্ণ ভবনে থেকে সংগঠন করার জন্য নিদান দিয়েছিল আলিমুদ্দিন। কিন্তু জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর দায়িত্ব ছেড়ে তিনি কৃষকসভার জন্য কলকাতায় চলে আসতে পারবেন না বলে জানানোয় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হন সূর্যবাবুরা। অনেকেই মনে করছেন, এই দ্বন্দ্বের জেরেই অমলবাবুর এবারেও ঠাঁই হল না সম্পাদকমণ্ডলীতে। আর তার জের গিয়ে পড়বে দলের জেলা সংগঠনে। অমলবাবুর অনুগামী নেতা-কর্মীরা আশাহত হয়ে কেউ কেউ যে নতুন করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বেন না এমন কথা জোর গলায় বলতে পারছেন না দলের নেতাদেরই একাংশ।
উত্তর ২৪ পরগনার তরুণ নেতা পলাশ দাসের সম্পাদকমণ্ডলীতে যাওয়া নিয়েও দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে একইভাবে। পলাশ দাসের থেকে দলে সিনিয়র এবং রাজ্য কমিটির সদস্যরা কেন এই যোগ্যতার জন্য বিবেচিত হলেন না, প্রশ্ন সেখানেই। তবে রাজ্য কমিটিতে এ নিয়ে সরাসরি কেউ আপত্তি না তুললেও জেলা পার্টির ভিতরে এ ব্যাপারে অনেকেই বেজায় ক্ষুব্ধ বলে শোনা যাচ্ছে। তবে সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বিদায় নেওয়া গৌতম দেব তাঁর কোটায় পলাশ দাসের নাম সুপারিশ করায় তা আর খারিজ করতে পারেননি সূর্যবাবুরা। পলাশের পাশাপাশি বাকি দুই নতুন মুখ কল্লোল মজুমদার ও শমীক লাহিড়ির নাম করে সরাসরি কেউ মুখ না খুললেও কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী দুই জেলা থেকেই কেন সর্বোচ্চ কমিটিতে বারবার জায়গা দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি কয়েকজন। সেই সূত্রেই পশ্চিম বর্ধমানের পার্থ মুখোপাধ্যায় বা হুগলির দেবব্রত ঘোষের মতো তরুণ অথচ যোগ্য নেতাদের ঠাঁই দেওয়ার দাবি ওঠে রাজ্য কমিটিতে।