গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্যপাল হিসেবে কার্যভার নেওয়ার পরপরই যাদবপুরে ছাত্র বিক্ষোভের মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ উপেক্ষা করে যেভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘেরাওমুক্ত করতে রাজ্যপাল ধনকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন, তার নিন্দায় সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে বস্তুত সাংবিধানকে অমান্য করেছেন বলে দাবি করেছিলেন পার্থবাবু। তারপরও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে শিলিগুড়িতে রাজ্যপাল প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই বৈঠকেও রাজ্য প্রশাসনের বা শাসক দলের কোনও প্রতিনিধি যোগ না দেওয়ায় বিরোধের সুর চড়তে থাকে। পুজোর মধ্যে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে এক শিক্ষক সহ তাঁর পরিবারের তিন সদস্য খুন হওয়ার ঘটনা নিয়েও তিনি কড়া মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, এই খুনের ঘটনা নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের অভিযোগই পোক্ত হয়েছিল। পরে অবশ্য খুনের কিনারায় পুলিস তৎপর হলে বিজেপিও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ওই ঘটনার জের টেনে পার্থবাবু রাজ্যপালের সাংবিধানিক লক্ষ্মণরেখা মেনে চলা উচিত বলে মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, রাজ্যপাল অতিসক্রিয় হয়ে পড়েছেন।
প্রতি ক্ষেত্রেই রাজ্যপালের ভূমিকায় রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে তৎপর হয়ে পড়ে কেন্দ্রের শাসক দল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজভবনকে ঢাল করে বিজেপি দলীয় রাজনীতি করছে। এই পটভূমিতেই রাজ্যপাল নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে নবান্নের কাছে চিঠি দিলেও প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করেন ধনকার। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিনে একের পর এক যেসব ঘটনায় রাজ্যপাল জড়িয়েছেন, তার সবই বাংলার সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, যাঁর নামে রাজ্য সরকার পরিচালিত হয়, সেই রাজ্যপাল যদি তাঁর রাজ্যের পুলিসের উপর ভরসা করতে না পারেন, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুব্রতবাবুর উদ্দেশে রাজ্যপাল বলেন, তাঁর মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক তথা মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য নিজেই সরকারের সঙ্গে কথা বলেই জেনে নিতে পারতেন। কিছু না জেনেই তিনি ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন। অর্থাৎ রাজ্যপালের ইঙ্গিত, তিনি নবান্নে যে চিঠি দিয়েছিলেন, তা সুব্রতবাবুর কথায় স্পষ্ট নয়। সুব্রতবাবু অবশ্য এদিনও তাঁর বক্তব্য থেকে নড়েননি। তিনি রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেন, কখন কী বলতে হয়, তা তিনি জানেন। নিজের সরকারের উপর রাজ্যপাল যদি ভরসা না করেন, তা দুর্ভাগ্যের। পার্থবাবুর নাম না করে তাঁর মন্তব্যের জেরে এদিন রাজ্যপাল বলেন, তিনি মোটেই অতিসক্রিয় নন। তিনি সক্রিয়। কিন্তু মন্ত্রীরা ডেকোরাম বজায় রাখছেন না। তাঁর মতে, মুখ্যমন্ত্রীর উচিত তাঁর ক্যাবিনেট সদস্যদের বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া।