দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, পানিহাটি পুরসভার প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলার সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন। একাধিক সংবাদপত্রের সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন তিনি। পুরুলিয়া জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী প্রণব দেওঘরিয়া সম্প্রতি পুরুলিয়ার সাইবার ক্রাইম শাখায় সন্ময়বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ডায়মন্ডহারবারের সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একাধিক আপত্তিকর এবং অপমানজনক মন্তব্য করার পাশাপাশি উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোরে আগরপাড়া এলাকা থেকে সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরুলিয়া জেলা পুলিসের সাইবার ক্রাইম শাখা গ্রেপ্তার করে।
যদিও অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতার পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতেই সন্ময়বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবিষয়ে সন্ময়বাবুর দাদা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শাসকের সমালোচনা করাতেই সন্ময়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। জুতো পর্যন্ত পরতে দেওয়া হয়নি। ওষুধও নিতে দেওয়া হয়নি। ২০ বছর ধরে কাউন্সিলার থাকা সন্ময়কে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও সেই সময় সাদা পোশাকের পুলিসের সঙ্গে ছিল। রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে অত্যাচার করা হয় সন্ময়বাবুর উপর। আমরা এর বিচার চাই।
সন্ময়বাবুর এক আত্মীয়া ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় বলেন, পুলিস তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় সন্ময়বাবু আমাদের বাড়িতেই ছিলেন। ওই বাড়ি তাঁর দ্বিতীয় অফিস। কয়েকমাসেই ২০০টিরও বেশি ভিডিও আপলোড করেছেন ইউটিউব চ্যানেলে। প্রচুর সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। পাশাপাশি বহু মানুষ তার ভিডিওর দর্শক। সেটাই শাসক দল সহ্য করতে পারেনি।
এবিষয়ে সন্ময়বাবুর আইনজীবী নীলেশ সরকার বলেন, ৬টি ধারায় সন্ময়বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তার অধিকাংশই জামিনযোগ্য। সন্ময়বাবুকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য পুলিস যে যুক্তি দেখিয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেউ মানহানির মামলা করতেই পারতেন। কিন্তু, এ ধরনের মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই করা।
এবিষয়ে সরকারি আইনজীবী অরুণ মজুমদার বলেন, যে ডিভাইসগুলি থেকে ভিডিও আপলোড করা হয়েছে তা উদ্ধারের প্রয়োজন রয়েছে। তাই পুলিসি হেফাজতের আবেদন করা হয়। এই ঘটনায়,তৃণমূলের স্বৈরাচারী আচরণ প্রকট হল বলে দাবি করেছেন আব্দুল মান্নান। যেভাবে সন্ময়বাবুর বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছে তা কোনও গণতান্ত্রিক রাজ্যের লজ্জা। তিনি বলেন, এতদিন রাজ্যে গণতন্ত্র উদ্ধারের যে দাবি তাঁরা জানিয়ে আসছিলেন তা যে কতটা যুক্তিযুক্ত ওই ঘটনা তার প্রমাণ। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, হিটলারের গেস্টাপো বাহিনী যেভাবে বিরোধীদের শায়েস্তা করত, তাই করেছে পুলিস। তাঁর তোপ, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে কোনও বিরুদ্ধ স্বর শুনতে চান না। বিজেপিও নিন্দা করেছে কংগ্রেস নেতার গ্রেপ্তারির ঘটনায়।
যদিও এবিষয়ে অভিযোগকারী প্রণব দেওঘরিয়া কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এবিষয়ে পুরুলিয়ার পুলিস সুপার আকাশ মাঘারিয়াকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।