কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার পর কোনও রাজ্যের রাজ্যপালের নিরাপত্তার জন্য এভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নজির নেই। বাংলার পূর্বতন কোনও রাজ্যপালের ক্ষেত্রেই এমন বন্দোবস্ত করেনি কেন্দ্রের সরকার। স্বাভাবিকভাবে দিল্লির কর্তাদের এই পদক্ষেপে বেজায় চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হলেও তিনি এনিয়ে মুখ খোলেননি। তবে নবান্নের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্তার কাছে তিনি নিজের ক্ষোভ গোপন রাখেননি বলেই জানা গিয়েছে। রাজ্য সরকার এবিষয়ে দিল্লির সঙ্গে আদৌ সংঘাতে যাবে কি না, তারও কোনও আভাস মেলেনি এদিন। যদিও এব্যাপারে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে যথারীতি। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, খুব দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। আমার ৫০ বছরের সংসদীয় রাজনীতিতে এমন জিনিস কখনও দেখিনি। রাজ্য সরকার তো রাজ্যপালের। রাজ্যের সেরা নিরাপত্তা কর্মীদের তিনি নিজের জন্য চাইতেই পারতেন। কিন্তু তা না করে কেন্দ্রের কাছে এই দরবার করার পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা এখনই বলতে পারব না। বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, যাদবপুর কাণ্ডের সময় রাজ্যপালের নিরাপত্তা কীভাবে বিঘ্নিত হয়েছিল, তা গোটা বাংলার মানুষ দেখেছে। তাঁর মতো একজন ভিভিআইপি’র নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্র তাঁকে সিআরপিএফ নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ করেছে।
রাজ্যপালের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআরপিএফ কবে থেকে নেবে, তা এদিন রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। ১৫ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তা আর চতুর্বেদির জারি করা আদেশে ধনকারের জন্য সারা দেশে জেড ক্যাটিগরির সিআরপিএফ নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানানো হলেও সেই ব্যবস্থা কবে থেকে বলবৎ হবে, তা বলা হয়নি। তবে বুধবারই সিআরপিএফের একদল অফিসার ও কর্মী রাজভবনে গিয়ে এনিয়ে রাজ্যপালের আধিকারিকদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলেছেন। তবে তাঁরা রাজভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবেন বলে কোনও আভাস দেননি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁরা রাজ্যপালের নিরাপত্তার ভার গ্রহণও করেননি। সেই কারণে এদিন পর্যন্ত এই দায়িত্ব কলকাতা পুলিসের হাতেই ছিল যথারীতি। রাজভবনের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত সিআরপিএফ বা সিআইএসএফের মতো কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা আদৌ নেবে কি না, সে ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনও নির্দেশিকা নবান্নে এখনও আসেনি বলেই খবর।
কলকাতা পুলিসের তরফে এদিন বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দিল্লি থেকে যুগ্ম কমিশনার (ইন্টেলিজেন্স) তথা ওএসডি দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যপালের নিরাপত্তার ভার সিআরপিএফের হাতে দেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে কবে থেকে তারা এই দায়িত্ব নেবে, তা কিছু জানানো হয়নি। এমনকী, রাজ্যপালের কনভয় বা পাইলটের দায়িত্ব কলকাতা পুলিসের হাতে থাকবে কি না, তাও স্পষ্ট নয়। যাদবপুর কাণ্ডের পর তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল রাজভবন থেকে। সেই মতো বাড়তি পাইলট কার এবং কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী বাড়ানো হয়েছিল। জেড ক্যাটিগরির যে নিরাপত্তা বর্তমানে তাঁকে দেওয়া হয়, অতীতে আর কোনও রাজ্যপালের ক্ষেত্রে সেই বন্দোবস্ত ছিল না।