রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
বিএসএফের দাবি, এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পদ্মা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি জওয়ানরা তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি করে। বিএসএফ ফ্ল্যাগ মিটিং করার জন্য সেখানে গিয়েছিল। হঠাৎ করেই বিজিবি গুলি চালাতে শুরু করায় প্রতিরোধ গড়তে পারেনি বিএসএফ। বোটে পাঁচজন বিএসএফ জওয়ান ছিলেন।
বিএসএফের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এদিন সকালে তিনজন মৎস্যজীবী নৌকা নিয়ে পদ্মায় ইলিশ মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই পরিচয়পত্র ছিল। বিএসএফের অনুমতি নিয়েই তাঁরা পদ্মায় গিয়েছিলেন। মাঝ পদ্মায় তাঁদের প্রত্যেককে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ আটক করে। পরে তারা দু’জনকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু জলঙ্গি থানা এলাকার সিরোচার গ্রামের মৎস্যজীবী প্রণব মণ্ডলকে বাংলাদেশের নিরপত্তারক্ষীরা আটকে রাখে। ওই দু’জন মৎস্যজীবী ফিরে এসে জলঙ্গি এলাকার কাকমারি চরে বিএসএফ পোস্টে সে কথা জানান। তারপরেই বিএসএফের ১১৭ নম্বর ব্যাটালিয়ানের জওয়ানরা বাংলাদেশি সীমান্ত রক্ষীদের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে কথা হয়। সেইমতো পাঁচজন বিএসএফ কর্মী একটি বোটে চড়ে পদ্মার ওয়াটার চ্যানেল বাউন্ডারি পিলার ৭৫/৭S এর কাছে পৌঁছয়। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরেও বিজিবি ওই মৎস্যজীবীকে ছাড়তে রাজি হয়নি। উল্টে তারা বিএসএফের স্পিডবোট ঘেরাও করতে থাকে। সেসময় বোট চালক সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা গুলি চালায়। সেসময়ই ওই হেড কনস্টেবলের মাথায় গুলি লাগে। তবে বোট চালকের হাতে গুলি লাগলেও তিনি তাঁর কর্তব্য থেকে সরে আসেননি। ওই অবস্থাতেই তিনি বোট চালিয়ে ফিরে আসেন। এই ঘটনার পর বিজিবি আধিকারিকদের সঙ্গে বিএসএফ কথা বলে। বিএসএফ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে জখম জওয়ান বলেন, ওরা হঠাৎ করেই গুলি চালাতে থাকে। এরকম সাধারণত হয় না। কিন্তু ওরা কেন এরকম করল বোঝা গেল না। নদীতে কোনও সমস্যা হলে ফ্ল্যাগ মিটিং করেই সমাধান করা হয়। এদিন সেইমতোই প্রক্রিয়া চলছিল। ওদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদেরকে আক্রমণ করা। ঠিক সময়ে ফিরে না এলে ওরা হয়তো সবাইকে মেরে ফেলত। চোখের সামনেই বোটের মধ্যে আমাদের সহকর্মীকে লুটিয়ে পড়তে দেখলাম। কিন্তু সেসময় পিছু হটা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় ছিল না। কারণ সেসময় ওদের দু-তিনটি বোট সেখানে ছিল। আমাদের পাঁচজনের পক্ষে এতজনকে মোকাবিলা করা সম্ভব ছিল না। ফ্ল্যাগ মিটিং হওয়ার পর থেকেই দেখছিলাম ওরা আমাদের বোট ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে। ওরা আমাদের লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। অনেক গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আরেক বিএসএফ জওয়ান বলেন, পদ্মায় অনেক সময়ই মৎস্যজীবীরা সীমান্ত বুঝতে না পেরে এদিক সেদিক চলে যায়। অধিকাংশ সময় আলোচনা করেই এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা হয়। কখনোই কেউ সংঘাতের পথে যেতে চায় না। সেকারণে এদিন আমরা ভেবেছিলাম আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সেকারণে পাঁচজন জওয়ান গিয়েছিলেন। এরকম হবে জানলে আরও অনেকেই যেতেন। সেক্ষেত্রে ওরা মোকাবিলা করতে পারত না। কারণ ওদের চেয়ে আমাদের দক্ষতা অনেক বেশি। ওদের হামলার পরেও আমরা পাল্টা আক্রমণ করিনি। তবে এভাবে গুলি চালাতে থাকলে আমরাও সেইমতো প্রস্তুতি নিয়ে চলব।