দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে সিপিএম। প্রথমে তারা এই অনুষ্ঠান করার জন্য আলিপুরের খোলা মঞ্চ ‘উত্তীর্ণ’ বুক করেছিল। কিন্তু তিনদিন আগে গত সোমবার ইন্ডোর ব্যবহারের অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার। তড়িঘড়ি স্টেডিয়াম এবং সংলগ্ন চত্বর সাজানোর পাশাপাশি লোক জড়ো করার মরিয়া চেষ্টা চালায় রাজ্য নেতৃত্ব। এদিন অবশ্য ভিড়ে স্টেডিয়াম উপচে পড়েছিল। ব্যবস্থাপনাও ছিল যথেষ্ট ছিমছাম। সমাবেশে ভিড় দেখে মঞ্চে বসা নেতৃত্বও যথেষ্ট উৎসাহী হয়ে পড়ে। তার জেরে ইয়েচুরি থেকে শুরু করে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমের মতো নেতারা পার্টির শতবর্ষে পা দেওয়ার গৌরব নিয়ে উদাত্ত গলায় ভাষণ দেন। দেশ ও রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দক্ষিণপন্থী তথা ফ্যাসিস্ট শক্তির মোকাবিলা একমাত্র লালঝান্ডার দলই করতে সক্ষম বলে তাঁরা বারবার দাবি করেন তাঁদের বক্তৃতায়।
শতবর্ষের সমাবেশে প্রধান বক্তার ভাষণে ইয়েচুরি বলেন, মোদি জমানায় দেশের সামনে আজ চারটি প্রধান বিপদ। দেশের চরম আর্থিক বেহাল দশা এবং তার দরুণ সাধারণ মানুষের জীবনযন্ত্রণা, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মাধ্যমে মানুষের ঐক্য নষ্ট করা, সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপর আক্রমণ এবং সর্বোপরি সাধারণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ—এই চারটি ইস্যুতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক ঐক্য করেই লড়াইয়ে নামতে হবে। এজন্য আমরা চাই, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির মহা গণমঞ্চ তৈরি হোক। জরুরি অবস্থার সময় বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এমনই এক বড় মঞ্চ গঠন করেছিল। তাই দেশ বাঁচাতে এই মহা মঞ্চ গড়তে যারা তৈরি, তাদের স্বাগত। তিনি বলেন, গত এক দশকে দলের শক্তি সারা দেশেই কমেছে। দলের ১০০ বছর বয়স হলেও কেন এখনও দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা গেল না, সেই প্রশ্ন আজও ধেয়ে আসে আমাদের কাছে। এই ব্যর্থতা বা ত্রুটি আমাদের নিশ্চয়ই আছে। তবে এটাও স্বীকার করতে হবে, সীমিত শক্তি হলেও লক্ষ্য ও আদর্শে অবিচল থাকায় আজ আমরা শতবর্ষে এমন একটা সমাবেশ করার হিম্মৎ দেখাতে পারছি। দেশের আর কটা দল আছে, যারা এমন সাহস দেখাতে পারে?
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এদিন মুখে তৃণমূল বা মমতা সম্পর্কে কিছু না বললেও দলের রাজ্য নেতৃত্ব কিন্তু বিজেপি’র পাশাপাশি রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলকে রেয়াত করেনি এদিন। দলের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম তাঁর ভাষণে এদিন আরও একবার বুঝিয়ে দেন, বিজেপি বা তৃণমূলের মধ্যে বিশেষ ফারাক নেই। তাঁর কথায়, দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিস্ট দলগুলি অনেক সময় নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের নাটক করে। যেমন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহকে একান্ত বৈঠকে নেমন্তন্ন করে এসে কলকাতায় এনআরসি নিয়ে একদিন মিছিল করলেন। আসলে দিল্লির দাদা এবং বাংলার দিদি’র নাটক রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, দলের পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সংঘটিত জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যাকাণ্ডের শতবর্ষ স্মরণ করে এদিন সিপিএম। সেই উপলক্ষে বামপন্থী ঐতিহাসিক অধ্যাপক চমনলাল এদিন বিশেষ ভাষণ দেন।