পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
চিকিৎসায় অবহেলার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের স্বামীর করা এই অভিযোগ সূত্রে ভারতীয় ফৌজদারি আইন অনুযায়ী পুলিস এই মামলায় চার্জশিট দিয়েছে। মামলাটি বর্তমানে শিয়ালদহ আদালতে বিচারাধীন। বেলেঘাটা থানায় ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর দায়ের হওয়া সেই অভিযোগ হাইকোর্ট তার নিজস্ব বিচারবিভাগীয় ক্ষমতায় বাতিল করুক— এমনই আবেদন ছিল ওই ডাক্তারের। তাঁর যুক্তি, ওই আইনের যে ৩০৪ক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অযৌক্তিক। অবহেলার মাত্রা মারাত্মক হলেই এই ধারা প্রযোজ্য হতে পারে। নয়তো নয়। অভিযুক্ত বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে চিকিৎসা চালিয়েছেন, তা বলার কোনও সুযোগ এক্ষেত্রে নেই।
কারণ হিসেবে আবেদনকারীর তরফে বলা হয়, তিনি যোগ্যতাসম্পন্ন গায়নোকলজিস্ট। অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে সবরকম প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছিল। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর সুস্থ-সবল পুত্রসন্তান হওয়ার পর রোগী শ্বাসকষ্টের সমস্যায় পড়েন। যা দেখার পরই তাঁকে আইসিইউ বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। বাইরের ডাক্তার এনে তাঁকে দেখিয়ে অভিমতও নেওয়া হয়। কিন্তু, যে ‘সেপসিস’ রোগে তিনি আক্রান্ত হন, তার সঙ্গে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই এক্ষেত্রে দেওয়ানি অভিযোগ দায়ের হতে পারে। তাও সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে।
কিন্তু, সরকারি আইনজীবী বিনয় পাণ্ডা এই যুক্তির বিরোধিতা করে আদালতকে জানান, কেস ডায়েরি অনুযায়ী ওই ডাক্তার রোগীর পর্যাপ্ত যত্ন নেননি। এমনকী ভেন্টিলেশনে পাঠানোর পরেও। রোগী যে জটিল সমস্যায় ছিলেন, তার কোনও প্রতিফলন বা লিখিত কোনও অভিমত ‘বেডহেড’ টিকিটে নেই। উল্টে তিনি রোগীর পরিবারকে বিপথে পরিচালিত করেছেন। রোগীর আত্মীয়রা তাঁকে আরও ভালো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই একান্ত অনুরোধ বা প্রস্তাবও তিনি নাকচ করেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ‘মেডিক্যাল নেগলিজেন্স’-এর অভিযোগ সঠিক। এমনকী ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ রোগী বুকে যন্ত্রণার কথা বললেও, তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয় দুপুর ২ টো ৪০ মিনিট নাগাদ। শুধু তাই নয়, বাইরের ডাক্তার এনে দেখালেও, তাঁদের অভিমত বা পরামর্শমতো পদক্ষেপ করা হয়েছিল কি না, তা নিম্ন আদালতে তথ্যপ্রমাণ পেশ হলে বোঝা যাবে। তার আগে নয়।
এই যুক্তিতে আদালত সহমত হয়ে ডাক্তারের আবেদন নাকচ করেছে। যা আগামী দিনে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় ‘বেপরোয়া’ মনোভাব দেখানোর অভিযোগে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।