বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সংবিধান পুজোর আগে চূড়ান্ত হয়েছে। এই সংবিধানে সদস্য কীভাবে হওয়া যাবে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি অফিসে স্থায়ী কর্মীরাই ফেডারেশনের সদস্য হতে পারবেন। তাই সংবিধানে বলে দেওয়া হয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুল (ডব্লবিএসআর) এবং ডেথ কাম রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট (ডিসিআরবি) অনুশাসিত কর্মীরাই ফেডারেশনের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। শুধু স্থায়ী কর্মীরাই ওই দুটি ব্যবস্থার আওতায় পড়েন।
ফেডারেশনের সংবিধানে বলে দেওয়া হয়েছে, সরকারি দপ্তরে গ্রুপ বি, সি এবং ডি শ্রেণীর কর্মীরা সদস্য হতে পারবেন। গ্রুপ এ কর্মীদের কোনও উল্লেখ করা হয়নি। সরকারি কর্মীদের শ্রেণী বিন্যাস হয় বেতন স্কেলের উপর। ১২ নম্বর বা তার উপরের স্কেলে বেতন পাওয়া কর্মীরা গ্রুপ এ-র মধ্যে পড়েন। সচিবালয়ে সেকশন অফিসার ও ডিরেক্টরেটে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসারদের পদ থেকে গ্রুপ এ শুরু হয়। গ্রুপ এ কর্মীরা আলাদা সংগঠন করে ফেডারেশনের সহযোগী সংগঠন হিসেবে থাকতে পারবে বলে শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে তিন শ্রেণীর সরকারি কর্মীদের জন্য ফর্মের রংও আলাদা হবে বলে সংবিধানে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রুপ বি কর্মীদর ফর্মের রং হবে সাদা। গ্রুপ সি কর্মীদের আকাশি ও গ্রুপ ডি কমীদের সবুজ রংয়ের ফর্ম পূরণ করতে হবে। ১০ টাকা দিয়ে ফেডারেশনর সদস্য হওয়ার ফর্ম পূরণ করতে হব। সদস্য চাঁদা ধার্য হয়েছে মাসে চার থেকে পাঁচ টাকা। টানা ছয় মাসের চাঁদা বাকি পড়লে প্রাথমিক সদস্যপদ চলে যাবে।
রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন হওয়ার পর বামফ্রন্ট বিরোধী বেশ কয়েকটি কর্মী সংগঠনকে যুক্ত করে ফেডারেশন তৈরি হয়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ২০১২ সালে প্রথম সম্মেলন থেকে ফেডারেশনের যাত্রা শুরু হয়। ওই সম্মেলনে ফেডারেশন পরিচালনার জন্য মনোনয়নের মাধ্যমে কোর কমিটি গঠন করা হয়। কোর কমিটির তিন জন সদস্যকে আহ্বায়ক পদ দেওয়া হয়। তারপর থেকে এই সাংগঠনিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে ফেডারেশন চলছে। সংগঠন তৈরির পর সদস্য সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। কিন্তু ফেডারেশন সূত্রের খবর, সদস্য সংগ্রহে অনিয়ম হয়েছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা ফর্ম তুলে নিয়ে গিয়ে অনুগতদের সদস্য করান। একই কর্মী একাধিক ফরম পূরণ করে সদস্য হয়েছেন, এমন ঘটনাও প্রচুর হয়েছে।
সংবিধান তৈরি হওয়ার পর তাই সদস্য সংগ্রহ ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটের পর পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ফেডারেশন দেখভালের দায়িত্ব নেওয়ার পর সংবিধান তৈরি করে নতুন করে সদস্য সংগ্রহ ও তারপর সংগঠন ঢেলে সাজার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছ। সংবিধানে বলা হয়েছে, ফেডারেশনের সংগঠনে পাঁচটি স্তর থাকবে। একেবারে উপরে কেন্দ্রীয় কমিটি। তার পরে যথাক্রমে জেলা, মহকুমা, ব্লক ও ইউনিট কমিটি থাকবে। কলকাতায় জেলা কমিটির নীচে জোন ও ইউনিট কমিটি থাকবে। নবান্ন, সল্টলেক আলাদা জোন হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নীচের স্তরের কমিটিগুলি গঠন করা হবে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পর। সদস্য হওয়ার আবেদনের প্রোফর্মা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। সদস্য হওয়ার জন্য ঘোষণাপত্রে সই করতে হবে।