পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
তবে এদিন সবচেয়ে বেশি চর্চা ছিল রামপুরহাটের সেই বন্ধুকে ঘিরেই। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বন্ধুর খোঁজে শুক্রবার পুলিস বীরভূমে তল্লাশি চালায়। সে রামপুরহাটে নিজের বাড়িতে না থেকে সিউড়িতে ভাড়া বাড়িতে থাকত। সেখানেও পুলিস অভিযান চালিয়ে তাকে পায়নি। অবশেষে রাতে সিউড়ির একটি হোটেলে তার সন্ধান মেলে। এদিন আরও চার-পাঁচজনকে পুলিস দফায়-দফায় জেরা করে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই শিক্ষকের বাড়ির উপর অষ্টমীর দিন থেকে সুপারি কিলাররা নজরদারি চালাতে থাকে। ওই দিন শিক্ষক দম্পতি বাড়িতে ছিলেন না। পঞ্চমী থেকে তাঁরা সাগরদিঘির বাড়িতে ছিলেন। নবমীর দিন বাড়ি ফেরার পরেই খুনের ব্লু-প্রিন্ট চূড়ান্ত হয়। আততায়ীরা বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় রেইকি করে যায়। এক আধিকারিক বলেন, একধিকবার কোপ দেওয়ার পর পুরো ঘর রক্তে ভেসে গিয়েছিল। কিন্তু পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া আততায়ীর টি-শার্টে রক্তের দাগ ছিল না। সে বাড়ির বাথরুমে রক্ত ধুয়ে বেরিয়ে যায়। পরে সেটি একটি পুকরে ফেলে দেয়। অত্যন্ত পেশাদার খুনি ছাড়া এত নিখুঁত ‘অপরেশন’ করা সম্ভব নয়।
এদিকে ওই শিক্ষককে আরএসএস কর্মী বলে দাবি করে বিজেপি আন্দোলনে নামলেও পুলিস এদিন ফের নিশ্চিত হয়ে যায় এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই তাঁদের খুন হতে হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, আততায়ীর সঙ্গে এক বছরের বেশি সময় ধরে ওই পরিবারের টানাপোড়েন চলছিল। সম্প্রতি তা চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রামপুরহাটের ওই বন্ধু মৃত শিক্ষকের স্ত্রী বিউটি পালকে একটি বিমা সংস্থার সর্বোচ্চ র্যাঙ্কে পৌঁছে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই পরিবারের আরও বেশি ঘনিষ্ঠ হয়। ওই গৃহবধূর নামে সে বীরভূমের মল্লারপুর এবং আখিরা এলাকার একটি গ্রাহক মিত্র কেন্দ্রে অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়। এছাড়া আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কে তাঁর নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। সেসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রকাশবাবুর বন্ধুও টাকা লেনদেন করত। প্রকাশবাবুর কাছ থেকে ধাপে ধাপে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা সে অনেক আগেই নিয়েছিল। এছাড়া ওই শিক্ষককে সাক্ষী রেখে সে আরও একজনের কাছে টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকাও পরিশোধ করতে সে গড়িমসি করছিল। টাকা ফেরতের জন্য প্রকাশবাবু তাকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সে এড়িয়ে যেতে থাকে। কিছু দিন ধরে সে ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বেশ কিছু দিন ধরে সে প্রকাশবাবুর ফোনও তুলছিল না। তারপরেই ওই পরিবারের উপর মর্মান্তিক পরিণতি নেমে আসে। নিহত দম্পতি। - ফাইল চিত্র