গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মালদহের এডিজে পঞ্চম কোর্ট এই বছরের ৩১ মে সাজা শুনিয়েছিল জাহানারাকে। সেই সাজা স্থগিত রাখা এবং সেই সঙ্গে জামিন মঞ্জুর করার জন্য তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর হয়ে স্বামী আব্দুল সেই আবেদন সমর্থন করে হলফনামা জমা করেন। আদালতকে তাঁরা জানান, তিন সন্তান নিয়ে তাঁদের পরিবার। ছেলেমেয়েদের বয়স যথাক্রমে ৭, ৫ এবং ২ বছর। এই শিশুদের দেখার জন্য পরিবারে দ্বিতীয় কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা নেই। ফলে আসামি ঘোষিত জাহানারা জেলে গেলে কে তাদের দেখবে। শিশুগুলি কার্যত অনাথ হয়ে পড়বে। তাই নিম্ন আদালতের সাজা স্থগিত রেখে তা হাইকোর্ট সময়মতো নিজের মতো করে বিচার করুক। ততদিন তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
জরুরি ভিত্তিতে আবেদনটি শোনার জন্য আবেদন করা হলে প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জাহানারা-আব্দুলের বক্তব্যের সত্যতা সরেজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য পুলিসকে নির্দেশ দেয়। ফলে পুলিসের গাড়ি গিয়ে পৌঁছয় ওই জেলার কৃষ্ণপুর এলাকার মুরাদতলায়। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রথমে পরিবারটি সম্পর্কে পুলিসকর্তারা খোঁজ করেন। পরে আসামির বাড়িতেও যান। আর সেই সূত্রে যে রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়ে, তাতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ।
পুলিস রিপোর্ট বলছে, আসামির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে রেজাউল করিমের বয়স ২৪ এবং তার ভাই নূর হোসেন ২২ বছর বয়সি। এরা দু’জন কার্পেট ও বিছানার চাদর ইত্যাদির ব্যবসা করে। আর তাদের ছোট বোন ১৯ বছরের হাবিবা খাতুনের বিয়ে হয়েছে কালিয়াচক থানার অন্তর্গত অনন্তপুর গোপালগঞ্জের বাসিন্দা জাহাঙ্গির আলমের সঙ্গে। পুলিসের নির্দিষ্ট জিজ্ঞাসার জবাবে আসামির ছেলেরা জানায়, তাঁরা কেউ অসুস্থ নন। সাম্প্রতিককালে তারা হাসপাতালে ভর্তি হননি।
রায়ে এই রিপোর্ট উল্লেখ করে বেঞ্চ বলেছে, আসামি ও তাঁর স্বামী যে মিথ্যা বলেছেন, তা স্পষ্ট। ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলে বিচারব্যবস্থায় তাঁরা হস্তক্ষেপ করেছেন। শপথভঙ্গ করে হলফনামা দেওয়ায় বিষয়টি আদালত অবমাননাযোগ্য। একইসঙ্গে এর ফৌজদারি তদন্ত হওয়া উচিত। বেঞ্চ একথা বলামাত্রই আসামি পক্ষের আইনজীবী নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এই অবস্থায় বেঞ্চ আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে। ফলে আসামির জেলে যাওয়া ছাড়া অন্য পথ নেই বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। কারণ, এই রায়কে সঙ্গী করে তাঁদের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পথও বন্ধ বলে মনে করা হচ্ছে।