পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
মমতা তাঁর নিবন্ধে সিপিএমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে গিয়ে বলেছেন, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র কাঁদছে। সেখানে মানুষের সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ এই সময় সিপিএমের বন্ধুদের দেখে আমি বিস্মিত। যারা ত্রিপুরা নিয়ে নীরব। রাজ্যটা বিজেপির হাতে তুলে দিয়ে চুপ করে বসে আছে। কোনও আন্দোলন নেই। কোনও প্রতিবাদ নেই। যত রাগ আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকারের উপর। যাদের ‘ত্রিপুরা অভিযান’ করার কথা, তারা করছে ‘নবান্ন অভিযান’। এই প্রসঙ্গে সেলিম সহ সিপিএমের শীর্ষ নেতারা বলছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এ এক চরম রসিকতা এবং মিথ্যাচারিতা বাংলার মানুষের সঙ্গে। ত্রিপুরায় গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির তেমন কোনও অস্তিত্বই ছিল না। কিন্তু ভোটের আগে একাধিক বিধায়ক সহ সে রাজ্যের প্রায় গোটা তৃণমূল দলটাই মোদির দলে নাম লেখায়। এমনকী, দলের রাজ্য দপ্তরটারও হাত বদল হয়ে যায়। এ রাজ্যেও লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূলের একটা বড় অংশ ইতিমধ্যেই বিজেপির কোলে উঠে পড়েছে। বাকিটাও যাওয়ার অপেক্ষায়। সব্যসাচী দত্তদের মতো ‘সোনার টুকরো’ তৃণমূলীরা সেই আশঙ্কা প্রবল করে তুলেছেন।
সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, ত্রিপুরায় গত ১৯ মাসে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এক চরম নৈরাজ্যের সরকার চলছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের একমাত্র অ্যাজেন্ডা হল, কীভাবে সে রাজ্যে সিপিএমকে খতম করা যায়। বহু কর্মীর রক্ত ঝরিয়ে এবং কয়েকশো পার্টি অফিস গুঁড়িয়ে দিয়ে তারা সেই লক্ষ্যপূরণ করতে চাইছে। পুলিসের নিষ্ক্রিয়তার কারণে তাদের আক্রমণের হাত থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ তামাম শীর্ষ নেতারা পর্যন্ত রেহাই পাননি সেখানে। কিন্তু তাদের এই স্বৈরাচারী এবং নিকেশের রাজনীতির বিরুদ্ধে সিপিএম সহ বামপন্থীরাই সেখানে প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছে। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনকে দিল্লিতে পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কলকাতা সহ গোটা বাংলাতেও অজস্র মিটিং-মিছিল হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে নিজের গোয়েন্দা দপ্তর থেকে সে সম্পর্কিত রিপোর্টে চোখ বোলালেই আসল সত্যটা বুঝে যাবেন মমতা। আসলে কম খরচে শিক্ষা ও কাজের দাবিতে ‘দূরবিন দিয়ে দেখতে পাওয়া’ হাজার হাজার বামপন্থী ছাত্র-যুবর নবান্ন অভিযান দমন করতে বিজেপির মতো ফ্যাসিস্ট কায়দায় পুলিসি আক্রমণ নামিয়ে আনায় জনমানসে তৈরি হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। তার মোকাবিলায় তৃণমূল নেত্রী এখন ত্রিপুরার প্রসঙ্গ পেড়ে মূল বিষয় গুলিয়ে দিতে চাইছেন। দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের সঙ্গে তাঁর একান্ত বৈঠকের পর সারদা-নারদ মামলায় ক্ষমতাসীন দলের কেষ্টবিষ্টুদের সিবিআই ছুঁয়ে না দেখায় তা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। সেই গুঞ্জন ধামাচাপা দিতে মমতা বিজেপি-সিপিএম যোগাযোগ নিয়ে এই লিখিত মিথ্যাচারিতার রাস্তায় নেমেছেন বলে সেলিমরা সরব হয়েছেন।