সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
একটি আর্থিক বছরের মাঝপথে আচমকা উপভোক্তা পিছু কোটা অর্ধেক করে দেওয়ায় জেলায় জেলায় এনিয়ে বেশ সমস্যা হচ্ছে। যেমন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল ব্লকে ৮০০উপভোক্তার নামের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছিল। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে হাঁস-মুরগির বাচ্চা সাপ্লাই করার জন্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপ অধিকর্তা চিঠি দিয়েছিলেন। উপভোক্তাদের মাথাপিছু ১০টি করে হাঁস-মুরগির বাচ্চা দেওয়া হবে বলে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আগাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১১ সেপ্টেম্বরের নির্দেশিকার পর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের মাথায় হাত। কারণ, তাঁরা ১০টির পরিবর্তে পাঁচটি করে বাচ্চা নেওয়ার কথা বলতেই উপভোক্তারা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।
হাঁস-মুরগির বাচ্চা বিতণের জন্য উপভোক্তা তালিকা পঞ্চায়েত সমিতি বানালেও গোটা প্রক্রিয়ায় বিডিও-র অংশগ্রহণ আবশ্যক বলে সরকারি নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক কিংবা মহকুমা শাসক অথবা বিডিওর উপস্থিতিতে হাঁস-মুরগির বাচ্চা বিতরণ করতে হবে বলে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের জয়েন্ট কমিশনার স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
ছাগলের বাচ্চা বিতরণের ক্ষেত্রে উপভোক্তা তালিকা তৈরি করবে জেলা পরিষদ। সেক্ষেত্রে জেলাশাসক কিংবা অতিরিক্ত জেলাশাসকের অংশগ্রহণ থাকবে। এছাড়াও ছাগল বাচ্চা বিতরণের সময় অতিরিক্ত জেলাশাসক উপস্থিত থাকবেন। ২০১৯-’২০ সালে গোটা রাজ্যে ২০হাজার ছাগল ছানা বিলি করা হবে। হাঁস-মুরগির বাচ্চা তৈরির পর একদিনের ৫০টি বাচ্চা এক একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়। ২৮দিনের জন্য হাঁস-মুরগির বাচ্চার খাবার ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড স্বীকৃত ডিলারের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়। ২৮দিনের মাথায় গোষ্ঠীর কাছ থেকে বাচ্চা নিয়ে বিতরণ করা হয়।
হাঁস-মুরগির বাচ্চা বিতরণের আগে উপভোক্তা তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অনেক সময় রাজনৈতিক রং দেখা হয় বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তালিকা পঞ্চায়েত সমিতিতে পাঠানো হয়। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম বাছাই করার সময় নিজেদের দলের লোক কি না, যাচাই করে নেওয়া হয়। এর ফলে অনেক সময় সত্যিই যাঁদের প্রয়োজন আছে তাঁরা বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ। তাই হাঁস-মুরগি বিলির আগে উপভোক্তা তালিকা তৈরির সময় বিডিও-র অংশগ্রহণ এবং ছাগলছানা বিলির ক্ষেত্রে উপভোক্তা তালিকা তৈরির সময় জেলাশাসক কিংবা অতিরিক্ত জেলাশাসককে থাকতে বলা হয়েছে।
গত লোকসভা ভোটের জন্য এবছর অর্থবর্ষের গোড়া থেকে হাঁস-মুরগির বাচ্চা বিলি করা যায়নি। ভোট প্রক্রিয়া মিটতেই জুন মাস থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে। আগের নিয়মমতো প্রতি বেনিফিসিয়ারির জন্য ১০টি করে হাঁস-মুরগি বাচ্চা বিলি হয়েছে। এরপর ১১সেপ্টেম্বরের নির্দেশিকায় আচমকা সংখ্যা ১০থেকে কমে পাঁচ হচ্ছে। এই অবস্থায় উপভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী বলেন, আচমকা উপভোক্তাপিছু কোটা অর্ধেক করে দেওয়ার কারণে নানা সমস্যা হচ্ছে। এটা অর্থবর্ষের শুরু থেকে হলে এতটা সমস্যা হতো না।