সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাজনৈতিক কারণেই নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, গেরুয়া শিবিরের বিরোধিতায় নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকে বার বার বিদ্ধ করেছেন। দ্বিতীয় পর্বে এনডিএ সরকারের শপথগ্রহণ সহ চারবার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ এ পর্যন্ত এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এক দেশ এক ভোট, নীতি আয়োগের বৈঠক, মাওবাদী সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ, একশো দিনের কাজের বকেয়া অর্থ মেটানোর দাবি এবং হালে এনআরসি ইস্যুতেও সুর চড়িয়েছেন মমতা। এনআরসির প্রতিবাদ করে সাড়ে চার কিমি রাস্তায় পদযাত্রা করেছেন তিনি। পদযাত্রা শেষে শ্যামবাজারে জনসভার মঞ্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী পদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাম্মানিক পদ। তাঁর পদকে সম্মান করি। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, অঙ্গরাজ্যের প্রধান হিসেবে সেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভিত্তি করেই রাজ্যের জন্য দাবি আদায়ে মোদির কাছে দরবার করতে চলেছেন মমতা।
প্রস্তাবিত এই বৈঠককে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি ইতিমধ্যেই সরগরম। সুযোগ পেয়ে বিরোধীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, আগেই বলেছিলাম, মোদি-মমতার গট আপ চলছে। সারদা সহ চিটফান্ডের ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া দূরঅস্ত, রাজীবকে নিয়ে নাটক হচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী একান্তে বৈঠক করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের কথা কেউ ভাবছেন না। নজর ঘোরাতেই এই বৈঠক। একজন আইপিএস অফিসারের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় ধর্না দিতে পারেন, এখন বলতে পারছেন না রাজীব কুমার কোথায় আছেন?
বাম পরিষদীয় দলননেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যবাসীকে অন্ধকারে রেখে এইরকম পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিটিং করতে যাচ্ছেন কেন? এর আগে তো দফায় দফায় বৈঠক এড়িয়ে চলেছেন? এমন কী পরিস্থিতি হল, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে হচ্ছে? তাঁর প্রশ্ন, রাজীব কুমারকে বাঁচাতে না পিসি ভাইপোকে বাঁচাতে তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছেন। এতে প্রমাণ হল, দিদিভাই মোদিভাই তত্ত্ব সঠিক।
এই বৈঠক নিয়ে রাজ্য বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, নিজেকে, রাজীব কুমারকে, দলের শীর্ষনেতাদের বাঁচাতে মমতা শেষ চেষ্টা করতে দিল্লিতে যাচ্ছেন। কিন্তু গিয়ে কোনও লাভ হবে না। আগে কথায় কথায় দিল্লি গিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করেছেন, বর্তমানে অমিত শাহ সেই সম্ভাবনা সমূলে বিনাশ করে দিয়েছেন। মেদিনীপুরের বিজেপি এমপি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা কেন্দ্রের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি যান না। কিন্তু ঠেলার নাম বাবাজি। এবার তাই পড়িমড়ি দিল্লি ছুটতে হল।