পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবী বিদ্যা চর্চা কেন্দ্রটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো। ২০০৬ সাল থেকে সেখানে এম ফিলও চালু হয়। কিন্তু ইউজিসির অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে বহু চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে বসিয়ে দিতে হয়েছে। অধিকর্তা ঐশিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের আটজন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ছিলেন। বেতন না পেয়ে তাঁরা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এখন দু’জন শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। যে এমফিল এবং পিএইচডি স্কলারদের গবেষণা চলছে, তাঁরা রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান (রুসা) এবং অন্যান্য দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুদানে কিছু গবেষণা চলছে। একটি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স ছিল। সেটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
২০১৭ সালের ৯ জুন দেশের ১৬৩টি এই ধরনের সেন্টার বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ইউজিসি। তারপর ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেনস স্টাডিজের তরফে কেন্দ্রের কাছে এ ব্যাপারে তদ্বির করা হয়। ইউজিসিতে স্মারকলিপিও জমা পড়ে। তাই সেন্টার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার নীতি থেকে কিছুটা সরে এসেছে ইউজিসি। সম্প্রতি একটি নতুন রূপরেখা দিয়েছে তারা, যাতে প্রচুর নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। একবার উইমেনস স্টাডিজের নাম পাল্টে ফ্যামিলি স্টাডিজ করার কথাও ওঠে। তা খারিজ হয়। ঐশিকাদেবী বলেন, ইউজিসি একবার পাবলিক নোটিস করে গাইডলাইন দিল। আবার পরে সেটাকে বলছে খসড়া। বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য এগিয়ে এসেছে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সহায়তায় আমরা সেন্টারের কর্মীদের বেতনটা পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় সেটা ঋণ হিসেবেই দিচ্ছে। ইউজিসি কখনও অনুদান দিলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়কে মিটিয়ে দিতে হবে। সেটাও অনিশ্চিত। এই শাখায় পড়াশোনা এবং গবেষণা করছেন, তাঁদের ভবিষ্যতও যে অন্ধকারে, তা বলাই যায়। ইউজিসির অনুদানের জন্য শেষ চেষ্টা হিসেবে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকিট (ইউসি), অ্যাক্টিভিটি রিপোর্ট, এবং অডিট রিপোর্ট নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে। আবার হাতে করে দিয়ে এলেও বলা হচ্ছে, সেসব নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেন্টারের অধিকর্তা সহ-উপাচার্য (অর্থ) মীনাক্ষী রায় নিজে। এখানে অবস্থা আরও খারাপ। মীনাক্ষী দেবী বলেন, যাদবপুরের সুবিধা হল, ওদের স্থায়ী শিক্ষকরা রয়েছেন। আমাদের প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট আর প্রজেক্ট অ্যাসোশিয়েটরা প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পরে আর নেই। গোটা সেন্টারে আমি এবং আরেকজন আধিকারিককে নিয়ে তিন জন রয়েছেন। দু’বার গ্রুপ ডি এবং লাইব্রেরিয়ানদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয় ঋণ হিসেবে দিয়েছে। আগের এমফিল, পিএইচডি প্রার্থীরা এখনও লাইব্রেরিতে আসেন। সেমিনার বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগমূলক প্রোগ্রাম বন্ধ হয়নি। নতুন রূপরেখা অনুযায়ী সেগুলি আবশ্যিক। আমরা দু’বার ইউসিও পাঠিয়েছি। কিন্তু এক বছর কোনও অনুদান আসেনি। এই অবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কয়েকটি সার্টিফিকেট এবং ডিপ্লোমা কোর্সের আবেদন করেছেন। সেটা সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের বিবেচনাধীন। মীনাক্ষীদেবী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এগুলির অনুমতি দিলে অনেকটাই সমস্যা কাটবে। এ ধরনের কোর্সের চাহিদাও প্রচুর। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও নিজস্ব অর্থে কোনওরকমে তা চলছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, অধিকর্তা ছাড়া আর কেউ নেই। ফলে সেন্টারটি বন্ধই বলা যায়। ইউজিসির এক আধিকারিক বলেন, সেন্টারগুলি ইউসি দেওয়া নিয়ে প্রচুর টালবাহানা করছে। তবে, উইমেনস স্টাডিজ নিয়ে শীর্ষস্তরে নতুন করে ভাবনাচিন্তা চলছে।