ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ওষুধের ডোজের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যাঁদের জন্য লেখা, তাঁরা না বুঝলে নিরর্থক। তাই ই-প্রেসক্রিপশনে নিদেনপক্ষে ডোজের অংশটা বাংলায় করলেই ভালো। গোটা রাজ্যেই এই নতুন নিয়ম চালু হবে। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ পার্থপ্রতিম গুহ বলেন, মাসকয়েক হল চালু হয়েছে এই নয়া ই-প্রেসক্রিপশন। ওষুধের ডোজের অংশ বাংলায় হওয়ায় রোগীদের বুঝতে খুবই সুবিধা হয়েছে। ফার্মাসিস্টদের বোঝাতেও হয় না।
যেমন ধরা যাক, ডাক্তারবাবু রাতে খাওয়ার পর লিভোসেট্রিজিন গ্রুপের পাঁচ মিগ্রা কোন ট্যাবলেট পাঁচদিন একবার করে খেতে বলেছেন। যা প্রেসক্রিপশনের ভাষায় লেখা হয় ‘১ ট্যাবলেট ওডি’। দূরদূরান্ত থেকে সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীদের ক্ষেত্রে এই ‘ওডি’ বোঝা মুশকিল। দোকানদার বা হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট যতই বলুন না কেন, ‘ওডি’ মানে দিনে একবার। কিন্তু, বাস-ট্রাম ঠেলে বাড়ি ফিরে প্রেসক্রিপশন দেখে ওই ‘ওডি’ শব্দটি ধাঁধার মতোই লাগবে। বিধাননগর মহকুমার ই-প্রেসক্রিপশনে ওষুধের দোকান বা স্টোরের ফার্মাসিস্ট বা দোকানদারদের ওষুধ দেওয়ার সুবিধার ক্ষেত্রে ইংরেজিতেই লেখা রয়েছে ‘লিভোসেট্রিজিন ৫ এমজি ট্যাব ১ ট্যাব ওডি’। পাশাপাশি বাংলাতেও লেখা রাতে খাওয়ার পর ৫ ডেজ বা পাঁচদিন। ফলে ওষুধের ডোজ নিয়ে বিভ্রান্তি বা ভুল বোঝাবুঝির কোনও জায়গায় রইল না।
সাধারণভাবে শুধু ‘ওডি’ই নয়, ‘বিডি’, ‘টিডিসি’, ‘এসি’, ‘পিসি’, ‘এইচএস’ ইত্যাদি চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে ওষুধের ডোজ লেখার সুনির্দিষ্ট সঙ্কেত রয়েছে। যা বুঝতে শুধুমাত্র সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আসা গরিব, নিম্নবিত্ত মানুষজনেরাই নন, বহু উচ্চশিক্ষিতেরও কালঘাম ছুটে যায়। প্রসঙ্গত, ‘ওডি’ অর্থাৎ ওষুধ দিনে একবার, ‘বিডি’ দু’বার, ‘টিডিসি’ তিনবার, ‘এসি’ মানে খাওয়ার আগে, ‘পিসি’ মানে খাওয়ার পর, ‘এইচএস’ মানে শোওয়ার আগে— না বোঝালে বোঝে কার সাধ্য! ই-প্রেসক্রিপশনের ক্ষেত্রে রোগীকে দেখার পর কম্পিউটারে বসে ডাক্তারবাবু ওডি, বিডি লিখলেই দিনে একবার, দু’বার ইত্যাদি বাংলা হয়ে যাচ্ছে।
সল্টলেক মহকুমা হাসপাতাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, পিজি হাসপাতালের গ্যাসট্রোএনটেরোলজি, স্নায়ুরোগ চিকিৎসার উৎকর্ষকেন্দ্র আইওপি সহ কয়েকটি বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে ই-প্রেসক্রিপশন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে এনআরএস, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে। এইসব হাসপাতালে ই-প্রেসক্রিপশনে ‘মেডিসিন’ লেখা অংশে ওষুধের ডোজের অংশে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও লেখা থাকবে। ধাপে ধাপে চালু হবে গোটা রাজ্যেই। এমনই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার এক শীর্ষকর্তা। তিনি বলেন, গোটা ই-প্রেসক্রিপশনটিই বাংলায় করলে ভালো হতো। কিন্তু, রোগের নাম এবং কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। সব ইংরেজিতে করলে সমস্যা বাড়বে। কিন্তু, রোগীদের ভোগান্তি কমাতে যতটা করা যায়, দেখা হচ্ছে।