ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
অসমে এনআরসির খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন মমতা। এবার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ১৯ লক্ষের বেশি মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় প্রতিবেশী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কংগ্রেস ও বামেরা একসুরেই বিরোধিতা শুরু করেছে। উল্টোদিকে, অসমের পর একই ধাঁচে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার নামে বাংলাতেও এনআরসি চালু করার দাবি তোলা হয়েছে। বিগত লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বর্তমানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এনআরসি চালুর কথা বলেছিলেন। পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষেও জোরদার প্রচার করেছিল বিজেপি। অসমের পর এবার সে বিষয়ে রাজনৈতিক মহলে তৎপরতা শুরু করেছে বিজেপি। এদিন তারই জের টেনে মুখ্যমন্ত্রীর দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা, ধর্মের ভিত্তিতে বিজেপি বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে। কিন্তু কোনও মতেই এ রাজ্যে এনআরসি হতে দেব না। এর জন্য যত দূর যেতে হয়, তার জন্য তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। টিমটিম করে জ্বলা একটা দল (পড়ুন রাজ্য বিজেপি) ছাড়া সবাই এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব সমর্থন করেছে। বাম ও কংগ্রেস সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়েই থামেননি মমতা। তাঁর মতে, দেশের বিচার ব্যবস্থার কাছেও মদত মিলছে না। বিচারের জায়গাও হারিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় একমাত্র বিকল্প আন্দোলন। আমাদের জন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এখনও কি আমরা এক হতে পারি না! এই আক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গেই সমস্ত অ-বিজেপি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে পথে নামার ডাক দেন তৃণমূল নেত্রী।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে প্রথমে ফরওয়ার্ড ব্লকের আলি ইমরান রামজ (ভিক্টর), পরে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও একই সুরে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। মমতার দাবি, দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সেদিকে কোনও হুঁশ নেই। বাংলায় সদর দপ্তর থাকা ব্যাঙ্কগুলিকে অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত ৫০ বছর ধরে চন্দ্রযান নিয়ে গবেষণা চলছে। অথচ বর্তমান সরকার (পড়ুন নরেন্দ্র মোদি) সেই গবেষণার সাফল্য নিয়ে এমন ভাব করছে যেন সবটাই তাদের অবদান। আসলে অর্থনীতির মন্দাকে আড়াল করতেই চন্দ্রযানের সাফল্যকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তোপ দেগেছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।
প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিতর্কে অংশ নেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা এবং স্বাধীন সরকার। মনোজ বলেন, বিরোধী নেত্রী থাকার সময় ২০০৫ সালে সংসদে ডেপুটি স্পিকারের দিকে অনুপ্রবেশকারীদের নামের তালিকা ছুঁড়ে দিয়েছিলেন যিনি, এখন তিনি ক্ষমতায় বসে উল্টো কথা বলছেন। স্বাধীন সরকারের দাবি, অর্থনৈতিক কারণে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাঁকে শরণার্থী বলা যায় না, এটাই রাষ্ট্রসঙ্ঘের ঘোষণা। আসলে বিরোধীরা ছদ্ম ধর্মনিরেপক্ষ, তাই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে চায় না।