ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
সপ্তাহখানেক আগে গয়া থেকে ধরা পড়ে ভারতে জেএমবির মাথা ইজাজ আহমেদ। তাকে জেরা করে উত্তর দিনাজপুরে জেএমবি মডিউলের খোঁজ মেলে। সেখানে এই জঙ্গি সংগঠন কতটা শাখাপ্রশাখা বিস্তার করেছে এবং কাকে কোন কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার তথ্য হাতে আসে তদন্তকারী অফিসারদের। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় ইজাজ সঙ্গী আব্দুল বারি ও নিজামউদ্দিনকে। জানা যায়, সেখানকার একাধিক অনুমোদনহীন মাদ্রাসায় মূলত বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর বিভিন্ন সামগ্রী রাখা রয়েছে আব্দুল বারির বাড়িতে। সেখানে বুধবার তল্লাশি চালিয়ে ল্যাপটপ, ডিটোনেটর, টেবল ক্লক, ব্লেড, এলইডি বাল্ব সহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। নিজামউদ্দিনের বাড়িতে মেলে ল্যাপটপ ও মোবাইলের সিম।
ল্যাপটপ খুলতেই অফিসাররা দেখেন, সেখানে টাইম বোমা কীভাবে তৈরি করতে হয়, তার ফর্মুলা রয়েছে। সেই সঙ্গে আইইডি তৈরিরও নকশা রয়েছে। এজন্য কী কী রাসায়নিক লাগে, তাও দেওয়া রয়েছে সেখানে। আলাদা একটি ফোল্ডার তৈরি করা হয়েছে। এমনকী নতুন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিস্ফোরককে আধুনিক করার প্রক্রিয়া নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। এখান থেকেই গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, নতুন কায়দায় বিস্ফোরক তৈরির গবেষণা চালচ্ছিল জেএমবি জঙ্গি ইজাজ ও তার সঙ্গীরা।
এরপরই ইজাজকে এই নিয়ে জেরা শুরু হয়। প্রথমে সে এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে জানায়, দক্ষিণ ভারতে থাকাকালীন কওসর তাকে বিস্ফোরক তৈরি শেখায়। আইইডি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের টাইমার ডিভাইস তৈরিতে অত্যন্ত দক্ষ সে। পাশাপাশি টাইম বোমা তৈরি করার ফর্মুলাও সে রপ্ত করে ফেলেছিল। দেশীয় প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধরনের বিস্ফোরক তৈরি শেখে। উত্তর দিনাজপুরে জেএমবি ঘাঁটি গাড়ার পর সেখানে এই সমস্ত বিস্ফোরকই তৈরি করা হচ্ছিল। এজন্য গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। ইজাজের নেতৃত্বেই তা তৈরির কাজ চলছিল। মডিউলের সদস্যদের কাছে গিয়ে গিয়ে ফর্মুলা দিয়ে আসা হতো। এমনকী হাতেকলমে বিস্ফোরক তৈরি করে দেখানোও হতো। ইজাজ জেরায় জানিয়েছে, বিহারেও সে এই টাইমার ডিভাইস ও আইইডি নিয়ে গিয়েছে। তার কাছে যে সমস্ত জেএমবি মডিউলের সদস্যরা আসত, তাদের এই বিস্ফোরক দিত। সেখান থেকেই তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন। এমনকী বাংলাদেশেও তা পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সালাহউদ্দিনের এক সাগরেদ এসে তা নিয়ে গিয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন। ইজাজ অফিসারদের জানিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের একাধিক খারিজি মাদ্রাসায় মূলত টাইম বোমা, টাইমার ডিভাইস ও আইইডি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। হাতে কলমে সে নিজেই শিখিয়েছে নতুন জেহাদিদের। তাদের তৈরি করা বিস্ফোরক কতখানি শক্তিশালী হয়েছে, তা জানতে ফাঁকা জায়গায় পরীক্ষার কাজও চলত। এই অনুমোদনহীন মাদ্রাসাগুলিকে তারা কার্যত বিস্ফোরক তৈরির পরীক্ষাগার বানিয়ে ফেলেছিল।