হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা তো চিকিৎসক বা আইনজীবীদের মতো স্বাধীন পেশায় আসেন না। তাঁরা বেশিরভাগই চাকরি করেন। তাহলে এই লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা কেন? চেয়ারম্যান বলেন, ভাবুন তো, একটা ব্রিজ তৈরি হচ্ছে। সেই নির্মাণকাজ যাঁর দায়িত্বে হচ্ছে, তিনি ইঞ্জিনিয়ার। সেক্ষেত্রে তো একজন স্বাধীন পেশাদারের মতোই কাজ করছেন তিনি। তাহলে কি শুধুমাত্র পরামর্শদাতা বা ওই স্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের এই লাইসেন্স লাগবে? তিনি জানান, তা নয়, কেন্দ্রের নীতি, সব ইঞ্জিনিয়ারকেই এই লাইসেন্স নিতে হবে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এই নিয়ম লাগু হলে এনবিএ-র গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। কোনও ইঞ্জিনিয়ার অ্যাক্রেডিটেটেড প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেছেন কি না, তার উপরই তাঁর লাইসেন্স পাওয়া নির্ভর করবে, এমন আভাসও মিলেছে চেয়ারম্যানের কথায়।
কে কে আগরওয়াল বলেন, আবেদনের ক্ষেত্রে একটি প্রাথমিক ধাপ রাখা হয়েছে। তাতে উত্তীর্ণ হলেই পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাবে। তা সত্ত্বেও প্রায় ৮০ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। তিনি বলেন, যাদবপুরের মতো প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন না থাকলেও তাদের মান নিয়ে সার্বিকভাবে কারও প্রশ্ন নেই। কিন্তু সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এরকম নয়। আমাদের নীতি, ফ্যাকাল্টি উন্নতমানের হতে হবে। প্রথম বছর অন্তত ২০ শতাংশ ফ্যাকাল্টি পিএইচডি যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। তারপর বছর বছর সেই হার ১০ শতাংশ করে বাড়াতে হবে। এটা না হলে আবেদন করে লাভ নেই। আর যে প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ আসন পূরণ হয় না, তাদেরও আবেদন করার প্রয়োজন নেই। কারণ, সাধারণভাবে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নেই। এটাকেও আমরা খুব গুরুত্ব দিচ্ছি। তিনি জানান, আমরা কোর্সের ভিত্তিতে এই অ্যাক্রেডিটেশন দিয়ে থাকি। কোনও প্রতিষ্ঠান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স হয়তো তা পেল, আবার মেকানিক্যাল হয়তো পেল না। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে আমরা টানা ছ’বছর এবং তিন বছরের অনুমোদন দিয়ে থাকি।
এদিনের অনুষ্ঠানে অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)-এর ভাইস চেয়ারম্যান এম পি পুনিয়াও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, দেশে বছরে প্রায় ১৩ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার পাশ করেন। কিন্তু চাকরি পান মাত্র ছ’লক্ষের মতো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বাজারের চাহিদা মেনে পড়ুয়াদের শিল্পক্ষেত্রের উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে পারছে না বলেই এই সমস্যা হচ্ছে। তবে তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন কে কে আগরওয়াল। তিনি বলেন, এম পি পুনিয়া মূলত ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টের ভিত্তিতে একথা বলেছেন। তার বাইরেও প্রচুর নিয়োগ হয়। কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যায়। কেই এমবিএ পড়ে। তাঁদেরও বেকার বলা যাবে না। তবে, বিষয়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বিভিন্ন ওপেন কোর্স করলে লাভবান হবেন শিক্ষার্থীরা। যেমন একজন মেকানিক্যালের ছাত্র মেক্যাট্রনিক্সের একাধিক কোর্স করলেন বা রোবোটিক্সের কোর্স করে রাখলেন। তাঁর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর কোর্স করার দরকার নেই। এর জন্য তাঁদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) দুর্গাপুরের চেয়ারম্যান এবং অধিকর্তা অনুপম বসু ভাষাশিক্ষার উপর জোর দেন। তাঁর বক্তব্য, ভাষাশিক্ষা যথাযথ না হলে বিষয়টি রপ্ত করতে খুব অসুবিধা হয়। এদিনের আলোচনাসভায় ছিলেন সাংসদ তথা কেআইআইটি এবং কেআইএসএস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অচ্যুৎ সামন্ত, শিবপুর আইআইইএসটির অধিকর্তা পার্থসারথী চক্রবর্তী প্রমুখ।