কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের ভাবধারায় বিশ্বাসী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েক হাজার ভক্তের সমাবেশে এরপরই নাম না করে মমতা নিশানায় বিদ্ধ করেন নরেন্দ্র মোদি পরিচালিত কেন্দ্রের সরকারকে। বলেন, যে চোখে দেখতে পায় না, তার জন্য সমব্যথী। সব সময় সঙ্গে আছি। কিন্তু যে চোখ থাকতেও দেখতে পায় না, তাকে কী বলব! নিজের সরকারের প্রতি নজর দাও। কী করেছো নিজেরা। গত আট বছরে ধর্মীয় কাজ কী কী করেছি, তা চ্যালেঞ্জ করে বলছি। আমরা যা করেছি, তা কেউ করতে পারেনি। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ- সব তীর্থস্থান সংস্কার করা হয়েছে। প্রত্যয়ী মমতার কথায়, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়, তারকেশ্বর, তারপীঠ, গঙ্গাসাগর- চেহারা পাল্টে গিয়েছে সব জায়গার। মহাশ্মশানগুলোর চেহারা কী ছিল, এখন কী হয়েছে। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, সবার থেকে এগিয়ে আমরা। তাঁর কথায়, মহাপ্রভু মানতেন না ভেদাভেদ, উঁচুনিচু, অস্পৃশ্যতা। এখন তাঁর সেই ভাবাদর্শ আরও বেশি করে প্রচারের সময় এসেছে।
করতালি আর হর্ষ-উল্লাসের সঙ্গে সভাস্থল জুড়ে তখন শুধুই হরিবোল ধ্বনি। মহাপ্রভুর আদর্শ ও ভাবধারার প্রচারক গৌড়ীয় মিশনের এদিনের অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সন্ন্যাসীদের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন চৈতন্য গবেষকরা। তাঁদের সবাইকে সাক্ষী রেখে মিশনের সভাপতি তথা আচার্য শ্রীমদ ভক্তি সুন্দর সন্ন্যাসী মহারাজ এই মিউজিয়াম স্থাপনে মমতার অবদানের কথা স্মরণ করান ভক্তদের। এমনকী মিউজিয়াম ভবন তৈরির সময় পুরসভার বিশেষ ছাড় এবং কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার ক্ষেত্রে প্রতিপদে কীভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সাহায্য করেছেন, তার বিবরণ দেন। জয়ধ্বনি ওঠে মমতার নামে। সন্ন্যাসী মহারাজ বলেন, দিদি না থাকলে, এসব হত না। দিদি আমাদের বিরোধী, এটা মিথ্যা প্রচার। দিদি আমাদেরই একজন।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়াম স্থাপনের জন্য এখনও পর্যন্ত কয়েক দফায় ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন। এদিন মঞ্চ থেকে তাঁর ঘোষণা, গৌড়ীয় মিশন এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়ামের শ্রীবৃদ্ধির জন্য আরও ৫০ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে স্থানীয় এমপি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৫০ লক্ষ টাকা দেবেন বলে ঘোষণা করেন মমতা। বিশ্বের সর্বপ্রথম মহাপ্রভু মিউজিয়াম পূর্ণাঙ্গ রূপে গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন সম্প্রসারণ। সেক্ষেত্রে পাশের একটি বাড়ি অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু সেই বাড়িটি কেনার মতো প্রয়োজনীয় অর্থ গৌড়ীয় মিশনের নেই। বিষয়টি নজরে আসার পর এদিনই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ওই বাড়িটি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ৭০-৮০ লক্ষ টাকা দেবে কলকাতা পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে তাঁর নির্দেশ, বাগবাজারের পুণ্যভূমিকে ভক্তদের স্বাগত জানাতে তৈরি করতে হবে একটি তোরণও। বাগবাজার দুর্গোৎসব মাঠের অনুষ্ঠান শেষে মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মেয়রকে জানিয়ে দেন, গৌডীয় মঠের এই ভবনটিকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করতে হবে।