কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ও জোগান ঠিক রাখার স্বার্থে ১৯৫৫ সালে এসেছিল ‘এসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট’। অনেকেরই মনে থাকবে, সেই সময় বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য ছাপানো কার্ডের নীচে লেখা থাকত ‘অতিথি নিয়ন্ত্রণ বিধি প্রযোজ্য।’ অর্থাৎ, যথেচ্ছ খরচসাপেক্ষ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা না করা বা প্রচুর অতিথিকে নিমন্ত্রণ করা হচ্ছে না বলে আশ্বাস দেওয়া হত অনুষ্ঠানকর্তার পক্ষে। অন্যদিকে, ওই আইন মোতাবেক আরও এমন বেশ কিছু প্রশাসনিক নির্দেশ তখন কার্যকর করা হয়েছিল। তেমনই একটি সরকারি নির্দেশিকা ছিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পালস কন্ট্রোল অর্ডার’। অর্থাৎ, বিশেষ শ্রেণীর ব্যবসায়ী ১০ কুইন্টালের বেশি ডাল মজুত করতে পারবেন না। পাশাপাশি গরুর খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত খেসারির ডালও নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি রাখার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ইন্সপেক্টর ও কর্মীরা সামসুলের হেফাজত থেকে ১৯৮৭ সালে ১৭ কুইন্টাল ৫০ কিলোগ্রাম ডাল উদ্ধার করেন। বিধি অনুযায়ী তিনি সর্বোচ্চ ৬ কিলোগ্রাম খেসারির ডাল রাখতে পারতেন। কিন্তু, সেটিও তাঁর কাছে কেজি খানেক বেশি ছিল। সেই সূত্রে উপরোক্ত আইনি ব্যবস্থা অনুযায়ী তাঁকে চার মাসের কারাবাস ও ২৫০ টাকা জরিমানা করে ওই আইনভঙ্গের বিচার করার জন্য গঠিত বিশেষ আদালত। সেই রায় তিনি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন। জামিন মেলে। কিন্তু, তারপরই তাঁর ১৯৮৯ সালে করা আবেদনটি প্রায় ২০ বছরের জন্য ঘুমিয়ে পড়ে।
দীর্ঘ প্রায় দুই দশক বাদে মামলাটি শুনানির জন্য হাজির হলে এই বছরের ২৫ জুলাই সামসুলকে প্রশাসনিক নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। কারণ, আবেদনকারীর হয়ত মনেই নেই সেই আবেদনের কথা। অন্যদিকে যে আইনজীবী এই মামলাটি নিয়েছিলেন, তিনি প্রয়াত। তাঁর হেফাজত থেকে আবেদনটি হস্তান্তরিত হয় আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের হেফাজতে। মামলার নথি পর্যালোচনা করে তিনি আদালতের সামনে দু’টি অনিয়ম উল্লেখ করেন। প্রথমত, ফুড ইন্সপেক্টর ও তাঁর সহযোগীরা বাজেয়াপ্ত করা ডাল আইনানুযায়ী ওজন করাননি। দ্বিতীয়ত, এমন ক্ষেত্রে যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করে পণ্য বাজেয়াপ্ত করার কথা, তা অনুসরণ করা হয়নি। যে যুক্তি গ্রহণযোগ্য মনে করার আদালত সাজা মুকুব করেছে। অন্যদিকে এই মামলা সূত্রেই জানা গিয়েছে, যে বিধি অনুযায়ী সামসুলের সাজা হয়েছিল, সেটির বর্তমানে অস্তিত্বই নেই।